ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রংপুর অঞ্চলে সংরক্ষণ অভাবে পচে যাচ্ছে হাজার টন আলু

রংপুর অঞ্চলে সংরক্ষণ অভাবে পচে যাচ্ছে হাজার টন আলু

চলতি মৌসুমে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় রেকর্ড পরিমাণ আলুর আবাদ হয়েছে। তবে সংরক্ষণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকদের উৎপাদিত হাজার হাজার মেট্রিক টন আলু পচে নষ্ট হচ্ছে। এতে লাভের আশায় মাঠে ঘাম ঝরানো কৃষকরা এখন চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন।

রংপুর কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর বিভাগের ১ লাখ ১ হাজার ৫৭৬ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩২ লাখ ৩০ হাজার ৬৮২ মেট্রিক টন। তবে পর্যাপ্ত হিমাগার না থাকায় কৃষকের ঘর, উঠান, পুকুর পাড়ে আলুর স্তূপ পড়ে আছে। অতিরিক্ত গরম, বিদ্যুৎ ঘাটতি ও সংরক্ষণের অব্যবস্থাপনায় এসব আলুতে পচন ধরেছে।

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের আলু ব্যবসায়ী মামুন আর রশিদ জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ৫ লাখ টাকার আলু কিনে নিজ গুদামে রেখেছিলেন। কিন্তু অতিরিক্ত গরম ও বিদ্যুতের সমস্যায় সেগুলোর অধিকাংশই পচে নষ্ট হয়ে গেছে।

রংপুর মহানগরীর তামপাট এলাকার কৃষক মুসা মিয়া ও নুরুল ইসলাম বলেন, “এবার আলু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। না পারছি ফেলে দিতে, না পারছি বিক্রি করতে। দাম নেই, সংরক্ষণেরও উপায় নেই। সরকার যদি রপ্তানির ব্যবস্থা করতো, তাহলে কিছুটা হলেও বাঁচতে পারতাম।”

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হিমাগার সংকটে কৃষকরা ঘরেই আলু সংরক্ষণ করছেন। কিন্তু তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে না থাকায় আলুগুলো দ্রুত পচে যাচ্ছে। এর মধ্যেই ঘটেছে আরেক বিতর্ক—রংপুরের একটি হিমাগারে আলুর জায়গায় অবৈধভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছিল দই-মিষ্টি।

গত বুধবার সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে নগরীর ময়নাকুটির ‘এগো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ হিমাগার থেকে ৭ হাজার কেজি মিষ্টি ও দই জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। প্রতিষ্ঠানটিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পুষ্টি মিষ্টির সত্ত্বাধিকারী মিঠু জানান, ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত চাহিদার কারণে ভুল করে হিমাগারে দই-মিষ্টি সংরক্ষণ করা হয়েছিল। তিনি ভবিষ্যতে এমন ভুল আর হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

রংপুর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম জানান, “এবার আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় সংরক্ষণের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আমরা রপ্তানির চেষ্টা করছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”

আলু,সংরক্ষণ,লোকসান
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত