দেশে আবারও করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হলেও প্রাথমিক তালিকায় রাখা হয়নি রংপুরকে। বিভাগের ৮ জেলায় সীমিত পরিসরে করোনা পরীক্ষার উদ্যোগ নিলেও কিটের ঘাটতিতে তা শুরু করতে পারছে না স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রোববার অফিস খুললে বিস্তারিত জানা যাবে বলেছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। সোমবার বা মঙ্গলবার থেকে বিভাগের যে সমস্ত মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে আরটি-পিসিআর ল্যাব রয়েছে সেখানে আবারও করোনা পরীক্ষা শুরু হতে পারে।
করোনা পরীক্ষার প্রাথমিক তালিকায় বিভাগীয় শহর রংপুরকে রাখা না হওয়ায় জনমনে অসন্তোষ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের মত, করোনা পরীক্ষাও রংপুরকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, সমস্ত বিভাগকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে।
রংপুর বিভাগে করোনা পরীক্ষার কীট নেই বলেই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না কবে নাগাদ আবার পরীক্ষা শুরু করা যাবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটি নতুন উপধরন নিয়ে আবার ছড়িয়ে পড়ছে। তাই সবাইকে আবারও মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধিতে গুরুত্ব দিতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
নগরীর অনেক স্থানে ঘর থেকে বাইরে এলেও অনেকে মাস্ক পরছেন না। বিশেষ করে শপিং মল, কাঁচাবাজার, পরিবহণ ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে মানুষজন স্বাস্থ্যবিধিতে উদাসীনতা প্রদর্শন করছেন। অপরদিকে চিকিৎসক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ বলছেন, মহামারির শুরুতে সবাই যে দায়িত্ব ও সতর্কতা প্রদর্শন করেছিলেন, তা আবারও প্রয়োজন।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর থেকে এই অঞ্চলে করোনা শনাক্তের হার শূন্যের ঘরে নেমে এসেছে। বিগত সময়ে ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৫০৫টি নমুনা পরীক্ষায় ৬৪ হাজার ৮৯৫জন আক্রান্ত হন, সুস্থ হন ৬৩ হাজার ৪৯৫জন এবং মৃত্যু হয় ১ হাজার ৯১জনের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও আক্রান্ত ছিল দিনাজপুর ও রংপুর জেলায়।
প্রায় তিন বছর করোনার প্রকোপ কম থাকার কারণে অনেক কীটই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। নতুন করে কীট সংগ্রহ করার পরই আবারও করোনা পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হতে পারে।
রংপুর জেলার সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা বলেন, “সংক্রমণ বাড়লেও আতঙ্কিত হওয়া উচিত নয়। সবাইকে আবারও স্বাস্থ্যবিধিতে গুরুত্ব দিতে হবে।”
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয়ের উপপরিচালক ডা. ওয়াজেদ আলী বলেন, “করোনা পরীক্ষার কীট নেই। ঢাকা থেকেও নতুন তথ্য পাওয়া যায়নি। সোমবার বা মঙ্গলবার আবারও করোনা পরীক্ষা শুরু হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, যেসব হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব রয়েছে, সেখানে আবারও কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর অর্থাৎ ১৮ মার্চ করোনায় দেশে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ অাগস্ট দু’দিনে সর্বোচ্চ ২৬৪জন করে মারা যান এই ভাইরাসে।