চট্টগ্রাম বন্দরে বহুদিন ধরে পড়ে থাকা কনটেইনার নিলামে উঠছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, ডলার খরচ করে আমদানি করার পরও চট্টগ্রাম বন্দরে নানা কারণে বছরের পর বছর পড়ে আছে কয়েক হাজার কনটেইনার পণ্য। কোনো কনটেইনারে গাছ জন্মেছে, কোনোটা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে মরিচা পড়ে ভেঙে গেছে। এর ফলে বন্দরের মূল্যবান জায়গা অনুৎপাদনশীল হয়ে পড়েছে, সরকার হারিয়েছে রাজস্ব, শিপিং লাইনের কনটেইনার নষ্ট হয়েছে। এসব কনটেইনারের মধ্যে পণ্য ভালো আছে এমন ৪৭৫ কনটেইনার পণ্য দুই ধাপে নিলামে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, প্রতিমাসে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কাস্টম হাউসকে নিলামযোগ্য পণ্যের তালিকা দিয়ে আসছে। দ্রুত নিলাম হলে বন্দরের ভেতর গুরুত্বপূর্ণ জায়গা খালি হবে। সেখানে নতুন আমদানি পণ্যের কনটেইনার রাখা যাবে এবং বন্দরের ইফিসিয়েন্সি অনেক বৃদ্ধি পাবে।
নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২৪টি কনক্রিট মিকশ্চার মেশিন গাড়ি, টাইলস, কেমিক্যাল, জিপসাম বোর্ড, সিরামিক পণ্য, গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ, ইঞ্জিন অয়েল, হাইড্রোলিক অয়েল ইত্যাদি পণ্যভর্তি কনটেইনার নিলামে তোলা হচ্ছে। প্রথম ধাপে নিলাম হবে ২৪টি কনক্রিট মিকশ্চার মেশিন গাড়িসহ প্রায় ১২৫টি কনটেইনারে থাকা পণ্য। বাকি ৩৫০ কনটেইনারে থাকবে অপচনশীল পণ্য।
কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন প্রথম ধাপের ই-অকশন সম্পর্কে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে অখালাস, আটক ও বাজেয়াপ্ত করা বিভিন্ন ধরনের পণ্য যে অবস্থায় আছে নিলামে বিক্রির দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহী নিলাম ক্রেতারা ১৫ জুলাই সকাল ৯টা থেকে ৩০ জুলাই বেলা ২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ কাস্টমস, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটে ই-অকশন মডিউলে রেজিস্ট্রেশন করে নিলামে অংশ নিতে পারবেন। নিলামে অংশ নিতে ব্যক্তি শ্রেণির দরদাতার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র, টিআইএন সনদ, হালনাগাদ আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রত্যয়নপত্র থাকতে হবে। অনলাইন নিলামে বিড করার সময় কোটেশন মূল্যের ১০ শতাংশ জামানত হিসেবে যেকোনো তফসিলি ব্যাংক থেকে ‘কমিশনার, কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম’ অনুকূলে ইস্যুকৃত পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফট বা ডিডির স্ক্যান কপি দাখিল করতে হবে। মূল কপি ও দলিলাদি ৩০ জুলাই বেলা ২টায় সিলগালাযুক্ত খামে কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার রাখা বাক্সে জমা দিতে হবে। নয়তো অনলাইনে দাখিল করা দর বাতিল হবে। সর্বোচ্চ দরের ওপর সরকারি অগ্রিম আয়কর ও ভ্যাট যুক্ত হবে।
১৬-২২ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পণ্য পরিদর্শন করা যাবে। কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার নিয়মিত বিডাররা ডেলিভারি সহজ করার দাবি জানিয়েছেন। ১৫ দিনের মধ্যে অনুমোদন ও ১৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারি কার্যক্রম শেষ করলে নিলাম প্রক্রিয়ায় গতি আসবে বলে মনে করেন তারা।