জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র আফিকুল ইসলাম সাদের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ৫ আগস্ট সকালে আমার ছেলের ফেসবুক পোস্ট দেখে আমি বুঝতে পারিনি দেশ আজই ফ্যাসিবাদ মুক্ত হবে। অবসান ঘটবে ১৭ বছরের স্বৈরশাসনের।
বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত 'জুলাই শহীদ দিবস' পালন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তৃতা প্রদান কালে এসব কথা বলেন তিনি।
পুত্র শোকে শোকাহত সাদের বাবা কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার গুলিবিদ্ধ ছেলেকে হাসিনার পেটুয়া পুলিশ বাহিনী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা হাসপাতালে নিতে দেয়নি। সময় মত হাসপাতালে নিতে পারলে হয়তোবা বেঁচে যেত। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিন দিন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৮ আগস্ট দুনিয়ার মায়া ছেড়ে চলে যায় আমার কলিজার টুকরা।
তিনি পুলিশের প্রতি অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলের বুকের তরতাজা রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতন হলেও এখনো তাদের পুনর্বাসনে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা দোসররা নানা অপচেষ্টায় মগ্ন রয়েছে। এসব দোসরদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়নে দাবি জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক ড. মনোয়ার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে মানিকগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদ মনির, মাওলানা রমজান মাহমুদ, রোবায়েত শারমিন মিষ্টি, শহীদ রফিকের পিতা রহিজ উদ্দিন, শহীদ আফিকুল ইসলাম সাদ এর পিতা শফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক আব্দুল মোমিন ও শাহানুর ইসলাম, মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াছমিন খাতুন প্রমুখ।
এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যম কর্মীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মানিকগঞ্জের ৫ শহীদ পরিবারের দশজনকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। পরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।