গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে হাতে ব্যাগ নিয়ে বাজারে যান মো. ফরিদ হোসেন। দোকানির কাছে কাঁচা মরিচ সহ নানা সবজির দাম শুনেই আঁতকে ওঠেন তিনি।
রোববার (২০ জুলাই) দুপুরে ফরিদ হোসেন সাটুরিয়া গোলচত্বর খুচরা বাজারে কেনাকাটার জন্য যান। এ সময় তার সঙ্গে কথা হলে বলেন, সবজি ও কাঁচা মরিচ কিনতে বাজারে এসেছেন। তবে কাঁচা মরিচের দাম শুনে চমকে উঠেছেন।
এই ক্রেতা বলেন, এক সপ্তাহ আগে আধা কেজি কাঁচা মরিচ কিনেছি ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। সপ্তাহ ব্যবধানে এক পোয়ার দাম হয়েছে ৬০ টাকা। এই হিসেবে ২৪০ টাকা কেজি কাঁচা মরিচ।
বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম। এতে কাঁচা মরিচসহ কয়েকটি সবজির দাম বেড়ে গেছে। ক্রেতারা বলেছেন, এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকায়। সপ্তাহ ব্যবধানে সেই কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এক কেজি কাঁচা মরিচ।
ব্যবসায়ীরা বলেন, কয়েকদিনে টানা বৃষ্টির কারণে কাঁচামরিচসহ সবজির চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম হয়েছে। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে মরিচের ক্ষেত সহ সকল সবজির বাগান। এতে খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচসহ সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বৃষ্টির কারণেই কাঁচা পণ্যের দাম এভাবে বেড়ে যাচ্ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
সাটুরিয়া উপজেলার পল্লী হাটের কাঁচাবাজার আড়তের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে ক্ষেত থেকে কাঁচামরিচ তুলতে পারছেন না কৃষক। এতে বাজারে মরিচ ও সবজির সরবরাহ কমে গেছে। ফলে কাঁচা মরিচের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বেড়েছে সব ধরনের সবজির দামও। কাঁচা মরিচের দাম হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা।
সাটুরিয়া গোলচত্বর বাজারে আসা পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা তমছের আলি বলেন, গত সপ্তাহে এই বাজারে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে কাঁচা মরিচ। সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি করছেন ২০০ থেকে ২৪০ টাকায়। গতকাল ভোরে পল্লী হাট আড়ত থেকে কাঁচামরিচ পাইকারি কিনতে হয়েছে ২০০ টাকার ওপরে। এছাড়া বৃষ্টির দিনে কাঁচা মরিচ পানি পেলে পচে নষ্ট হয়ে যায়। সব মিলিয়ে প্রকার ভেদে ২০০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি করা হচ্ছে।
উপজেলার খুচরা বাজারগুলোতে সপ্তাহ ব্যবধানে কয়েকটি সবজির দাম কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। খুচরা বাজারে বেগুন এক সপ্তাহ আগে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি ঢেড়স ৪০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, লাউয়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা প্রতিপিচ, করলা ৬০ টাকা দামে প্রতিকেজি বিক্রি করা হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজের কোনো দাম বাড়েনি আগের মতই ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঁচা মরিচ ও সবজির দাম ওঠানামা করে। আগের দিন এক দাম ও পরের দিন আরেক দামে বিক্রি হয়ে থাকে। মূলত সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যায়। আর সরবরাহ কমে গেলে দাম বেড়ে যায়।
সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হোসেন বলেন, কয়েকদিনের অতি বৃষ্টিতে সবজির বাগান গুলো নষ্ট হয়ে যাওয়াতে কিছুটা দাম বেড়েছে তবে সার্বক্ষণিক আমরা বাজার মনিটর করছি যাতে কাচা মরিচসহ অন্যান্য সবজির দাম অতিরিক্ত কেউ না নিতে পারে।