ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

‘গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে’

‘গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে’

গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে হবে— এমন মন্তব্য করেছেন আশির দশকের ছাত্রনেতা ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম চৌধুরী।

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশন (বিআরজেএ)-এর আয়োজনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয় সংগঠনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব শেখ মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায়।

আবুল কাসেম চৌধুরী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দায়িত্ব নেওয়ার পর জাতীয় ঐক্য রক্ষা করে আধিপত্যবাদবিরোধী উন্নয়নের ধারা শুরু করেন। ২০২৪ সালের ফ্যাসিবাদের পতনের পর দেশের জনগণ তার জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আর পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাবাহিনীও জাতীয় ঐক্যে কাজ করছে। তারেক রহমান ২৪ জুলাই তার দলের কর্মীদের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আহ্বান জানানোর পর জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। ছাত্র সমাজকে স্মরণ রাখতে হবে—জাতীয় ঐক্য না থাকলে আবারও ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটতে পারে।’

তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ সাংবাদিকদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে ঘোষণা, আহতদের চিকিৎসা এবং ক্ষতিগ্রস্ত গণমাধ্যমগুলোর পুনরায় চালুর দাবি জানান।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘যদি সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হয়ে থাকে, তবে জেলা-উপজেলার সাংবাদিকরা কেন সরকারি ভাতা পাবেন না? শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খরচে রাষ্ট্র কেন সহযোগিতা করবে না? প্রেস কাউন্সিল, প্রেস ইনস্টিটিউটসহ গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার জরুরি।’

তারা আরও বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ৬৭ জন সাংবাদিক ও দেশপ্রেমিককে হত্যা ও গুম করা হয়েছে—এর বিচার করতে হবে। নিহতদের পরিবারের জন্য মাসিক ভাতা ও বাসস্থান নিশ্চিত করতে হবে, আহতদের রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা সেবা দিতে হবে।’

তারা দাবি করেন, ‘সব রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদ রক্ষায় দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সব কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের মতামত নিতে হবে। গত বছরের ৪ আগস্ট সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভা শেষে বিশেষ বাহিনীর গুলিতে আহত বিআরজেএ চেয়ারম্যানসহ সবাইকে সুচিকিৎসা দিতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।’

বক্তারা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস), বাংলাদেশ টেলিভিশন, রেডিও বাংলাদেশ ও তথ্য মন্ত্রণালয়কে ফ্যাসিবাদের দোসরদের থেকে মুক্ত করার দাবি জানান।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার।

সেই সাথে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহকারী মহাসচিব ও আমার দেশের চিফ রিপোর্টার বাছির জামাল।

অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন—

* বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক ও ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি এবং বর্তমান নির্বাহী সদস্য মো. মোদাব্বের হোসেন,

* সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম,

* জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সম্রাট,

* জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বেলাল উদ্দিন আহমেদ,

* বিআরজেএ ভাইস চেয়ারম্যান মো. সাজেদুল ইসলাম,

* যুগ্ম মহাসচিব ইমারন আহমেদ,

* সাংগঠনিক সম্পাদক তাজ উদ্দিন আহমেদ,

* চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিনিধি তাজুল ইসলাম মানিক ও ইশরাক ইয়াসিন প্রমুখ।

সমাবেশে নেতারা সংগঠনের গঠনতন্ত্র মেনে সবাইকে সদস্য হওয়ার আহ্বান জানান এবং দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।

জাতীয় ঐক্য,প্রাতিষ্ঠানিক রূপ,গণতন্ত্র
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত