
ভেড়া পালনে স্বাবলম্বী হচ্ছেন সমতল ভূমির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক অসহায় নারী সুনতী মাহাতো। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ফাজিলনগর গ্রামের সুনতী মাহাতো (৪১) কষ্ট আর অভাবকে তাড়িয়ে ভেড়া পালনে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এখন সংসারে আলোর মুখ দেখছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নিমগাছি এলাকায় বিয়ে হয়েছিল সুনতীর। স্বামীর বাড়িতে না থেকে তিনি ফাজিলনগর গ্রামে ছোটো একটি ঘরে ২ সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন দীর্ঘদিন ধরে। একসময় ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর অন্য নারীদের সাথে এলাকায় কৃষি কাজে মজুরি বেচেছেন তিনি। সুনতী মাহাতো দীর্ঘদিন ধরে অভাবের সাথে যুদ্ধ করে আসছিলেন এবং এলাকার কৃষকের কৃষি কাজের সাথে অন্যান্য কাজও করেছেন। এ কাজের মজুরি দিয়ে খেয়ে না খেয়ে সংসার চালাতেন তিনি। তার এ দুঃখ কষ্টের দৃশ্য নজরে আনেন স্থানীয় প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
এ বিভাগ থেকে তাকে বিনামূল্যে দুটি ভেড়া দেয়া হয়। এ ভেড়া পেলে তিনি স্বাবলম্বী হবেন এমন প্রত্যাশায় তাকে ভেড়া দুটি দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে একটি ভেড়া কিছুদিন পর অসুস্থ হয়ে মারা যায় এবং আরেকটি ভেড়া তিনি সযত্নে পালন করতে থাকেন। এ ভেড়া থেকে সুনতী মাহাতোর পালে এখন ৬টি ভেড়া রয়েছে এবং সেইসাথে ৪টি ছাগলও পালছেন তিনি। ইতোমধ্যেই ১টি ভেড়া বিক্রি করেছেন এবং ছাগলের দুধও স্থানীয়ভাবে বিক্রি হয়ে থাকে। সকাল-বিকেল তিনি এলাকার মাঠে ছাগল-ভেড়াগুলো চড়ান এবং ছেলে অসিত মাহাতো এখন একটি দোকানে কাজ করছেন। ভেড়া ছাগল পেলে সুনতী অভাবকে তাড়িয়ে এখন স্বাবলম্বী হচ্ছেন বলে তিনি দাবি করেন। তার ভেড়া ছাগল পালন দেখে অনেক নারীও গবাদি পশু বিশেষ করে ভেড়া-ছাগল পালনে এ আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রাণিসম্পদ বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, উক্ত এলাকার সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী পরিবারগুলোর আর্থ সামাজিক অবস্থা ও জীবন মান উন্নয়নের জন্য প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে প্রকল্প নেয়া হয়। সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সুফল ভোগীদের অনেকেই ভেড়া, গরু, হাঁস মুরগি লালন পালন করে ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারছেন। ইতোমধ্যেই প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে বিনামূল্যে দেয়া ভেড়া ও বকনা গরু থেকে একাধিক গরু ও ভেড়ার মালিক হয়েছেন। স্বল্প জায়গায় গবাদি পশু লালনপালন করে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকেরা স্বাবলম্বী হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।