
উত্তরের জেলা দিনাজপুরে ইরি-বোরো চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পথে রয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলায় মোট লক্ষ্যমাত্রার ৮৭ শতাংশ চাল সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখনও অনেক চালকল তাদের নির্ধারিত পরিমাণ চাল সরবরাহ করেনি। এজন্য ৪৩টি মিল মালিককে ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ দিয়েছে খাদ্য বিভাগ।
খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে দেশে মোট ১৪ লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে দিনাজপুর জেলাতেই সংগ্রহ করা হবে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৯৫ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত জেলায় ১ লাখ ৯ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮৭ শতাংশ। এখনো ঘাটতি রয়েছে ১৭ হাজার মেট্রিক টনের মতো।
অন্যদিকে, ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এই জেলা। ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৬৪৭ মেট্রিক টন। বাস্তবে সংগ্রহ করা হয়েছে ১৬ হাজার ২৪৮ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার ১২৮ শতাংশ।
সরকারের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী চাল ও ধান সংগ্রহের সময়সীমা ছিল ৩১ জুলাই পর্যন্ত। তবে সেটি বাড়িয়ে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় চাল সংগ্রহে সরকারের সঙ্গে ৮৯৫টি চালকল চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। এর মধ্যে মাত্র ২২টি মিল শতভাগ চাল সরবরাহ করেছে। ২১টি মিল সরবরাহ করেছে ১০-২০ শতাংশ চাল। সব মিল যদি চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহ করে, তাহলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব বলে জানিয়েছে খাদ্য বিভাগ।
খাদ্য বিভাগের নীতিমতে, কোনও চালকল যদি চুক্তি অনুযায়ী ৬০ শতাংশের বেশি চাল সরবরাহ করে, তাহলে সেটি শাস্তির আওতায় পড়বে না। তবে চুক্তি করে ৬০ শতাংশের কম সরবরাহ করলে কিংবা চুক্তি না করেই উৎপাদন চালিয়ে গেলে, সেক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত আমন মৌসুমে ৩১৬টি চালকল ও চাল ব্যবসায়ীর লাইসেন্স বাতিল করেছিল খাদ্য বিভাগ। তাদের মধ্যে ২৯৬টি সিদ্ধ ও ২০টি আতপ চালকল ছিল। একইভাবে চলতি মৌসুমেও যেসব মিল চুক্তি করেনি বা চুক্তির শর্ত পূরণ করেনি, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪৩টি চালকলকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
তবে গত মৌসুমে যাদের লাইসেন্স বাতিল হয়েছিল, তাদের আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৩২টি চালকল আবেদন জমা দিয়েছে।
দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী বলেন, বোরো সংগ্রহ মৌসুমে ৮৭ শতাংশ চাল সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে। সময়সীমা বাড়িয়ে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে। অবশিষ্ট চাল সংগ্রহে মিলগুলোকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।