ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রংপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো আ. লীগের দখলে

রংপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো আ. লীগের দখলে

রংপুরের আট উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়ণ প্রকল্পের হাজারো ঘর এখনো নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের দখলে রয়েছে। রাতে এই ঘরগুলোকে ওই সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের জন্য নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহার করছে। এছাড়া মাদক সেবন ও বেচাকেনার পাশাপাশি এখানে চলছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড।

ফলে প্রকৃত ভূমিহীনরা আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন এবং জেলাজুড়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।

জেলা প্রশাসকের অফিস ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর নির্মাণ শুরু হয়। রংপুর জেলার আট উপজেলা (তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ, গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, মিঠাপুকুর, পীরগঞ্জ, পীরগঞ্জ ও সদর) ভূনি ও গৃহহীন উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

ছয় হাজার ৫৪৮ জন ভূমি ও গৃহহীনের তালিকা অনুযায়ী ধাপে ধাপে ঘর নির্মাণ করা হয়। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে জেলায় ছয় হাজার ১৩০ জন গৃহহীনের নামে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। এতে বদরগঞ্জে ৮১৫টি, তারাগঞ্জে ৭১৪টি, সদরে ৬৬৭টি, গঙ্গাচড়ায় ৯৯০টি, কাউনিয়ায় ৯১৩টি, পীরগঞ্জে ৯০৫টি, মিঠাপুকুরে ১,৬৫৮টি এবং পীরগঞ্জে ১,০৯৬টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রথম ধাপে একটি ঘর নির্মাণে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও পরবর্তীতে ঘরগুলো নির্মাণে তিন লাখ চার হাজার টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ বৃদ্ধি পায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আধাপাকা ও টিনশেড ঘরগুলোতে দুটি কক্ষ রয়েছে। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় প্রায় দুই লাখ টাকা। ঘরগুলোতে রান্নাঘর, শৌচাগার, বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে অধিকাংশ ঘর ফাঁকা, কিছু ঘরে তালা দেখা গেলেও সেখানে মাদকের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ঘরগুলো দখল নিয়ে অনিয়ম চলছে। যেমন, আকবর আলী নামে একজনের ঘর জোরপূর্বক আওয়ামী লীগ নেতা মোখলেস আলীর কাছে চলে গেছে, এবং যুবলীগের বাবলু ইসলাম নামে এক ব্যক্তির ঘর ভাড়া দিয়ে বিক্রি করেছেন।

বদরগঞ্জ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা ও গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, আগের কোনো অনিয়ম সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ তারা পাননি। তবে কিছু ঘর ফাঁকা রয়েছে যা চিহ্নিত করে প্রকৃত ভূমিহীনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, গৃহ ও ভূমিহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে পূর্বের অনিয়ম এবং বর্তমান অবস্থার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা তদন্ত করছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আ. লীগের দখলে,আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর,রংপুর
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত