
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে এক শিশুকে দিনভর মোটর সাইকেলে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে রাতে রাস্তার পাশের এক পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিয়ে চলে যান এক সৎ বাবা। অটোরিকশার হেড লাইটের আলোতে হাবুডুবু খেতে দেখে ওই পথে চলাচলকারী এক পথচারী শিশুটিকে পুকুর থেকে জীবিত উদ্ধার করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শিশুটিকে দেখার জন্য শতশত উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়।
শনিবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ছড়ারপাড় এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
শিশুটির নাম তাসিন (৬)। সে পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট জেলার সখের বাজার এলাকার মৃত তারা মিয়ার ছেলে।
শিশু তাসিন জানায়, তার বাবার মৃত্যুর পর বড়ভাই বিপ্লব-সহ তারা মা ববিতা বেগমের কাছেই থাকত। ৬/৭ মাস আগে লালমনিরহাট সদরের সাপটানা এলাকার আকবর আলীর ছেলে মুরাদ হোসেনের সাথে তার মা ববিতা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শিশু তাসিন ববিতা বেগমের সাথে মুরাদের বাড়িতে ছিল। শনিবার মুরাদ বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাসিনকে নিয়ে বের হন। মোটর সাইকেলে সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে রাত নয়টার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ছড়ারপাড় নামক স্থানে রাস্তার পাশের পুকুরে ছুড়ে ফেলে চলে যায় মুরাদ। বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে অটোরিকশার হেড লাইটের আলোতে পুকুরে হাবুডুবু খেতে দেখে শিশু তাসিনকে উদ্ধার করে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান পার্শ্ববর্তী ফকিরপাড়া গ্রামের আজিপুর ইসলাম। পরে ফুলবাড়ী থানার পুলিশ রাত দশটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পরপরই দেখতে না পেলে শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হতো না। এরকম নিষ্ঠুর কাজ যে করতে পারে তার কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।
ফুলবাড়ী থানা পুলিশের দায়িত্বে থাকা এস আই আব্দুর রহিম জানান, শিশুটিকে পানিতে ফেলে হত্যার চেষ্টাকারী সৎ বাবা মুরাদ হোসেনকে লালমনিরহাট থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। উদ্ধারকারী আজিপুর ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে সৎ বাবা মুরাদকে আসামি করে ফুলবাড়ী থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। শিশুটিকে বাড়িতে নিতে মা-ভাইসহ পরিবারের লোকজন থানায় রয়েছেন।