
পাবনার ঐতিহ্যবাহী হস্তচালিত তাঁত শিল্প ক্রমশ বিলীনের পথে। ক্রমাগত লোকসান এবং কাঁচামাল ও শ্রমিক খরচ বৃদ্ধির কারণে তাঁত মালিকরা পেশা বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন। গত ১০ বছরে জেলার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ তাঁত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে হাজার হাজার পরিবার জীবিকার সংকটে পড়েছে।
পাবনা তাঁত বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে জেলায় ২৩,৯৭৫টি তাঁত ছিল। বর্তমানে তা কমে প্রায় ১৬,৫০০। বিশেষ করে পাবনা সদর, সাঁথিয়া ও সুজনগর উপজেলায় তাঁত কারখানার সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমেছে।
তাঁত ব্যবসায়ীরা জানান, ৮০ কাউন্টের সুতার দাম বেড়ে ২৮ হাজার টাকা, রঙের দাম ৪ হাজার টাকা, আর শ্রমিকের মজুরি দ্বিগুণ হয়ে ৪০০ টাকা হয়েছে। কিন্তু বাজারে তাঁতে বোনার কাপড়ের চাহিদা কমায় আয়ের সঙ্গে খরচ মিলছে না।
সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নের প্রায় ৮০–৯০ শতাংশ তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। পূর্বে ৫ হাজার তাঁত ছিল, এখন মাত্র ৩,৫০০। এতে ৬ হাজার পরিবার জীবিকা হারিয়েছে।
তাঁত শ্রমিক ও মালিকরা সরকারের কাছে সুতার দাম ও রঙের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা চেয়েছেন। তাঁত বোর্ডের স্থানীয় লিয়াজোঁ কর্মকর্তারা বলেন, তাঁত কমছে, কিন্তু উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে শিল্পে পুনরুদ্ধার সম্ভব হচ্ছে না।
পাবনা জেলা প্রশাসক মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, হস্তচালিত তাঁতের উৎপাদন ক্ষমতা কম, তাই তাঁতকাররা সরে আসছেন। আধুনিক পদ্ধতির তাঁত আছে, তবে সমস্যা থাকলে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।