
নিত্যপণ্যের দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চালের বাজার। সারাদেশের মতো চুয়াডাঙ্গাতেও হঠাৎ বেড়ে গেছে চালের দাম। সব ধরনের চাল কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষের নাজেহাল অবস্থা।
ভারত থেকে বর্তমানে কোনো চাল আমদানি হচ্ছে না। যদিও বাজারে চালের ঘাটতি নেই, তারপরও দামের ঊর্ধ্বগতি থামছে না। বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গার পাইকারি ও খুচরা চালের বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, গেল বোরো মৌসুমে জেলায় ধান উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ৬ হাজার ১২৭ মেট্রিক টন। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও মিল মালিকরা বলছেন, ধানের দাম বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তাই চালের দামও বেড়েছে। অন্যদিকে, গত কয়েক মাস ধরে ভারত নতুন চাল আমদানি বন্ধ রেখেছে। ফলে দেশের উৎপাদিত ধানের চাল দিয়েই বাজারের চাহিদা মেটাতে হচ্ছে। এ কারণে দাম বেড়েছে আরও।
চুয়াডাঙ্গার চালপট্টি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা চাল কেজিতে পাইকারিতে ৫৫ টাকা (২ টাকা বেড়েছে), খুচরায় ৫৭ টাকা। মিনিকেট চাল পাইকারিতে ৭৩ টাকা, খুচরায় ৭৫ টাকা। বাসমতি চাল কেজিতে পাইকারিতে ৮৬ টাকা, খুচরায় ৮৮ টাকা। স্বর্ণা চাল পাইকারিতে ৫০ টাকা, খুচরায় ৫২ টাকা।
সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যেই এই অস্বাভাবিক দাম নিয়ে ক্ষোভ ও অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি মৌসুমের আউশ ধান বাজারে উঠলেই দাম কিছুটা কমবে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বার্ষিক চালের চাহিদা ৩ কোটি ৮০ থেকে ৩ কোটি ৯০ লাখ টন। এর প্রায় ৬০ শতাংশই আসে বোরো মৌসুম থেকে। চলতি বোরো মৌসুমে রেকর্ড ২ কোটি ১৪ লাখ টন ধান উৎপাদন হয়েছে। সরকারের গুদামেও রয়েছে ২১ লাখ টনের বেশি খাদ্যশস্যের মজুত। তারপরও বোরোর ভরা মৌসুমে গত তিন মাস ধরে চালের দাম বাড়ছে।
চুয়াডাঙ্গা চালপট্টির ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলেন, চালের দাম হঠাৎ করে বেড়েছে। বাজারে সরবরাহ আছে, তবে নতুন চাল আসেনি। সামনে আউশ ধান আসলে দাম স্বাভাবিকে আসবে। আর ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হলে দাম আবার কমে যাবে।
চাল কিনতে আসা ক্রেতা হাসিবুর রহমানের আক্ষেপ, বাজারে চালের দাম এত বেশি যে কোনো চালই কেনার মতো অবস্থা নেই। সবজির দামও আগুন। আয়ের তুলনায় ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। গত মাসে যে চাল কিনেছি ৫০ টাকায়, এখন সেই চাল ৫২ টাকা। যদি এভাবে দাম বাড়তে থাকে তাহলে কিভাবে বাঁচব?
চুয়াডাঙ্গা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজার পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম বলেন, নতুন ধান কাটা শুরু হয়েছে। বাজারে নতুন ধানের চাল আসলে দাম কমে আসবে। ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় আপাতত দাম বেশি, তবে আতঙ্কের কিছু নেই, বাজার শিগগিরই স্বাভাবিক হবে।