ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়েও বন্ধ চাঁদপুর আধুনিক নৌ বন্দরের নির্মাণ কাজ

প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়েও বন্ধ চাঁদপুর আধুনিক নৌ বন্দরের নির্মাণ কাজ

চাঁদপুর আধুনিক নৌ বন্দরের নির্মাণাধীন কাজের প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে দেওয়ার পরও এক বছরের অধিককাল যাবত কাজ বন্ধ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে।

এ নৌ বন্দরটির কাজের প্রকল্প ব্যয় ২৬ কোটি টাকা বাড়িয়েও দেওয়ার হলেও দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ চাঁদপুরের আধুনিক নৌ বন্দরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রেখেছে তমা কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ হয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ।

বন্দরের অবকাঠামো না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রী সাধারণের। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন আবারও নতুন ঠিকাদার নিয়োগ হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের কাজ এক বছর তিন মাস ধরে বন্ধ। ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর একনেকে অনুমোদন পায় ‘চাঁদপুর আধুনিক নৌ-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প’। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ৬৭ কোটি টাকা। পরবর্তীতে এটির ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৯৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বিশ্বব্যাংক ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ অনুযায়ী বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করে পাইলিং এর কাজ শুরু করা হয়। তবে পাইলিং কাজ শেষ হলেও অর্থাভাবে নির্দিষ্ট সময়ে হয়ে উঠছে না বন্দরের নির্মাণকাজ। ফলে গত জুন মাস থেকে প্রায় ১ বছর ৩ মাস যাবত নৌ-বন্দর নির্মাণকাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ঢাকা-চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক লঞ্চ যাতায়াত করে এ বন্দরটি দিয়ে। দেশের অন্যতম নৌরুট হলেও কাজ চলমান থাকায় নেই যাত্রী ছাউনি, বসার ব্যবস্থা ও টয়লেট। যাত্রী সেবায় দ্রুত এই নৌ বন্দরের কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন যাত্রী ও লঞ্চ মালিকপক্ষ।

ঢাকাগামী লঞ্চ যাত্রী আবু রায়হান ও রিয়াদ হোসেন জানান, চাঁদপুর লঞ্চঘাট দিয়ে সব সময় যাতায়াত করি। গত কয়েক বছর ধরে দেখছি লঞ্চঘাটের কাজ চলমান। কবে এই কাজ শেষ হবে। নতুন বন্দরের জন্য এখানে কিছুই হচ্ছে না। বিশেষ করে যাত্রী ছাউনি, বসার স্থান, টয়লেট নেই। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে চলমান এ বৃষ্টির মৌসুমে যাত্রীদের ভিজতে হয় আপন প্রাণে। যাত্রীদের দুর্ভোগ লাগবে দ্রুত নির্মাণ কাজ করা প্রয়োজন।

নৌ-ঘাটের লঞ্চ মালিক প্রতিনিধি আলী আজগর সরকার জানান, দেশের দ্বিতীয় নদী বন্দর চাঁদপুর, কিন্তু সেই ভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে লঞ্চঘাটের কাজ চলমান। পাইলিংয়ের কাজ শেষ হতে না হতেই এখন আবার পুরোপুরি কাজ বন্ধ। আমরা জানতে পেরেছি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এখানে বরাদ্দকৃত অর্থ না পাওয়ার কারণে কাজ করতে পারছে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে বন্দর নির্মাণকাজ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

তমা কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মী মোশারফ হোসেন বলেন, আমি চাঁদপুর আধুনিক নৌ টার্মিনালের কাজ ও মালামাল দেখাশোনা করি। এখানে এক মাসের বেশি সময় ধরে এসেছি, তখন থেকে দেখে আসছি কাজ বন্ধ। কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে আমার জানা নেই।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) চাঁদপুর কার্যালয়ের উপপরিচালক (বন্দর) বসির আলী খান বলেন, আগে যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে, তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে আবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করবে মন্ত্রণালয়। নতুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এলে আবার হয়ত বরাদ্দ দিয়ে দ্রুত কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রকল্প ব্যয়,নৌ বন্দর,নির্মাণ কাজ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত