
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে কোনো প্রকার ঘটনা ছাড়াই মিথ্যা গল্প রচনা করে একটি নিরীহ পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে ওই মামলাটি সরেজমিন তদন্ত ছাড়াই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার অভিযোগ উঠেছে তাড়াইল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে।
সোমবার দুপুরে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এমনটাই দাবি করেছেন হয়রানির শিকার ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
এ সময় এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনও এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সঠিক তদন্তের দাবি জানান। অভিযোগটি উঠেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের কারারক্ষী ও উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের সহিলাটী গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে আবু হানিফের বিরুদ্ধে।
সরেজমিন ও আদালতের মামলা সূত্রে জানা যায়, সহিলাটী গ্রামের দুই চাচাতো ভাই আবু হানিফ ও মনির মিয়ার পরিবারের মধ্যে বাড়ির জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে বহুদিন ধরে। চলতি বছরের ৪ এপ্রিল বাদী আবু হানিফ মামলা করেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন বিবাদী সুফিয়া আকতার ও তার দুই ছেলে মনির হোসেন, সানি মিয়া দা, লাঠি, কুড়াল, লোহার রড নিয়ে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন এবং বসতবাড়ির জায়গা দখল করেন।
তবে বিবাদী পক্ষের দাবি, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা অভিযোগ করেন, এসআই লুৎফর রহমান সরেজমিনে না গিয়েই আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছেন। মামলার স্বাক্ষীরা জানান, তারা কিছুই জানেন না এবং তাদের কোনো বক্তব্য নেওয়া হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারাও অভিযোগ করে বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো।
ভুক্তভোগী সুফিয়া আকতার ও তার দুই ছেলে মনির হোসেন ও সানি মিয়া বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে না গিয়েই মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে। তারা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে হয়রানির বিচার চান।
অন্যদিকে আবু হানিফ দাবি করেন, তিনি প্রকৃত ঘটনাই উল্লেখ করে মামলা করেছেন।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইম দাদ খান নওশাদ ও ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান ফরিদ জানান, তারা সরেজমিনে গিয়ে দেখেছেন—মারামারি কিংবা জায়গা দখলের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। উভয় পরিবারকে ঘরোয়া পরিবেশে বসে বিষয়টি মীমাংসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে এসআই লুৎফর রহমান বলেন, তিনি গোপনে তদন্ত করেছেন এবং বাদীর আনা সাক্ষীদের জিজ্ঞেসাবাদে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
এ বিষয়ে তাড়াইল থানার ওসি সাব্বির রহমান জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছেন। তবে প্রতিবেদনটি আসামিদের পছন্দ না হলে তারা আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন।