ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

উত্তরা ইপিজেডে সংঘর্ষ: শ্রমিক নিহত, আহত অর্ধশতাধিক

উত্তরা ইপিজেডে সংঘর্ষ: শ্রমিক নিহত, আহত অর্ধশতাধিক

নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন রূপ নেয় সহিংসতায়। গত চার দিন ধরে টানা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভের জেরে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) এভারগ্রিন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি (বিডি) লিমিটেড অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

তবে কারখানা বন্ধের ঘোষণা সত্ত্বেও মঙ্গলবার সকাল থেকে উত্তেজনা থামেনি। আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ইপিজেড এলাকা। এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন হাবিব ইসলাম (২০) নামে এক শ্রমিক। তিনি ইপিজেডে অবস্থিত ইকো কোম্পানির কর্মী ছিলেন।

হাবিব নীলফামারী সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের কাজিরহাট গ্রামের বাসিন্দা দুলাল হোসেনের ছেলে।

এছাড়া সংঘর্ষে অন্তত ৫৫ জন শ্রমিক আহত হন, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে নীলফামারী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফরহান তানভিরুল ইসলাম নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সকালে শ্রমিকরা ইপিজেড এলাকার বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। টিয়ারশেল, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। আতঙ্কে আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় এবং সাধারণ মানুষ নিরাপত্তার জন্য এলাকা ত্যাগ করে।

কারখানা কর্তৃপক্ষের দেওয়া এক নোটিশে জানানো হয়, টানা আন্দোলনে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯-এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী ২ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় চালুর বিষয়ে জানানো হবে।

শ্রমিকদের উত্থাপিত ২০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে— উৎপাদন টার্গেট কমানো, নিয়মিত ওভারটাইম প্রদান, ছুটি ও বেতন সংক্রান্ত সুবিধা, আবাসন সমস্যা সমাধান, প্রমোশনের স্বচ্ছতা, কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, গর্ভবতী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ সুবিধা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধ এবং অপ্রাসঙ্গিক কারণে চাকরিচ্যুতি না করা।

শ্রমিক সোহাগ হোসেন বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে চার দিন ধরে আমাদের ন্যায্য দাবিগুলো উপস্থাপন করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো আলোচনায় আসেনি। বরং ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিয়ে আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে।”

এ বিষয়ে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর সাইদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

উত্তরা ইপিজেড,সংঘর্ষ,শ্রমিক নিহত
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত