অনলাইন সংস্করণ
১৪:২৮, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে গতকাল শুক্রবার ইমাম মাহাদী দাবিদার নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাকিবুল ইসলাম।
তিনি জানান, গতকালকের ঘটনায় ১০ থেকে ১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এছাড়া পুলিশের দুইটি গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
আসামিদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এদিকে নুরাল পাগলের দরবারে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও মরদেহ উত্তোলন করে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার পর বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দরবারের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ দেখতে সেখানে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৫ আগস্ট) জুমার নামাজের পর রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডে ইমাম মাহাদী দাবিদার নুরাল পাগলের দরবারে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় নুরাল পাগলের ভক্তদের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন নিহত এবং দুই পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয় ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে ১০ থেকে ১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে নুরাল পাগলের মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে সেনাবাহিনী ও র্যাব মোতায়েনের পর।
প্রসঙ্গত, আশির দশকে নুরুল হক নিজেকে ‘ইমাম মাহাদি’ দাবি করে এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন। পরে চাপের মুখে এলাকা ছাড়লেও কিছু ভক্তসহ তিনি পুনরায় ফিরে এসে দরবার প্রতিষ্ঠা করেন। সম্প্রতি ঢাকার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হলে তাকে গোয়ালন্দ দরবার শরিফে মাটি থেকে উঁচু স্থানে, কাবা শরিফের আদলে একটি কাঠামো বানিয়ে দাফন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দিন ধরেই এলাকায় উত্তেজনা শুরু হয়।
স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে, একটি কমিটি গঠন করে এবং পরিবারকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময়ও দেয়। কিন্তু শুক্রবারের জুমার পর তৌহিদি জনতা শহীদ মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে এবং এরপর হামলায় অংশ নেয়।
