
তোলা ছবি ও গল্পের মাধ্যমে উপস্থাপন করে বিদ্যমান সমস্যা তুলে ধরতে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী এক অনন্য ফটো ভয়েস প্রদর্শনী ও সংলাপ, যার শিরোনাম ছিল “তরুণরাই পারবে!
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ, “সনি গ্লোবাল রিলিফ ফান্ড ফর কোভিড-১৯ (২০২৪ থেকে ২০২৬ পর্যন্ত)” ও সনি গ্রুপের সহায়তায় মঙ্গলবার এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, “এই আয়োজনটি বিশেষ, কারণ এটি তরুণদেরকে বাস্তব জীবনের চিত্র তুলে ধরার মাধ্যমে শিশুদের সমস্যা ফুটিয়ে তোলার সুযোগ দিয়েছে। ‘ফটো ভয়েস’ কেবল গল্প বলার একটি পদ্ধতি নয়, এটি তাদের ফটোগ্রাফির দক্ষতা বিকাশেরও একটি মাধ্যম।”
তিনি আরও বলেন, “জেলা পর্যায়ে কক্সবাজার চাইল্ড প্রোটেকশন বোর্ড শিশু সুরক্ষার বিষয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং এই ধরনের উদ্যোগসমূহকে সমর্থনকারী তথ্য সরবরাহ করছে, যা শিশুর সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তা করছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন জাপান-এর নির্বাহী পরিচালক আকিকো তাকাই বলেন, এই ফটো ভয়েস প্রকল্পের মাধ্যমে শিশুরা যে দৃঢ়তা ও সৃজনশীলতা দেখিয়েছে, তা বিশ্বব্যাপী সংহতির এক অনন্য উদাহরণ। আমরা এই প্রচেষ্টায় সহযোদ্ধা হতে পেরে গর্বিত এবং বাংলাদেশে শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর সুমন সেনগুপ্ত বলেন, “এই প্রদর্শনীর সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হলো—এখানে উপস্থাপিত প্রতিটি গল্প এসেছে সরাসরি শিশু ও তরুণদের কাছ থেকে। তারা যে সাহসিকতার সঙ্গে ছবি ও গল্পের মাধ্যমে নিজেদের কথা বলেছে, তা আমাদের বড়দের চ্যালেঞ্জ জানায়—আমাদের শুনতে হবে, কাজ করতে হবে, এবং এমন একটি শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যা তাদের বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটায়। আমরা বাংলাদেশ সরকার এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে থেকে এই পথে এগিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রদর্শনীর পর শিশু, কিশোর-কিশোরী ও তরুণরা নিজেরাই সংলাপ পর্ব পরিচালনা করে। তারা নিজেদের তোলা ছবি ও ব্যক্তিগত গল্পের মাধ্যমে সরাসরি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সামনে তাদের কমিউনিটির শিশু সুরক্ষাবিষয়ক উদ্বেগগুলো তুলে ধরে। এই সংলাপের মাধ্যমে শিশু সুরক্ষাবিষয়ক গভীরতর বোঝাপড়া সৃষ্টি হয় এবং তা সমাধানে সম্মিলিত প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত হয়।
সেভ দ্য চিলড্রেন বিগত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে শিশুদের জন্য কাজ করে আসছে এবং ২০১২ সাল থেকে কক্সবাজার জেলায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি শিশু, কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে এবং শিশুদের নিরাপত্তা, অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে মিলিতভাবে একটি কার্যকর শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।