
দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রা বিরতি দেওয়া ও সবচাইতে বড় কার্ভ স্টেশন ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন। স্টেশনটিতে যাত্রী ছাউনি না থাকায় যাত্রীদের বর্ষায় বৃষ্টিতে ভিজে এবং শুষ্ক মৌসুমে রোদে পুড়ে ট্রেনে ওঠা নামা করতে দুর্ভোগ পোহাতে হতো। অবশেষে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগের আওতাধীন এই স্টেশনটিতে নির্মিত হলো যাত্রী ছাউনি।
পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন চালু হয়। দ্বিতল ভবনের স্টেশনটির নিচে রয়েছে স্টেশন মাস্টারের কক্ষ, টিকিট কাউন্টার, যাত্রীদের বিশ্রামাগার ও একটি ওয়াশরুম। দোতলায় রয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। রাজধানী ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী ট্রেন ও যাত্রীর সংখ্যা বাড়ায় প্লাটফর্মের পরিধি বাড়ানো হলেও কোনো শেড নির্মাণ করা হয়নি। এ কারণে রোদ ও বৃষ্টিতে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছিল। আন্তঃনগর সিল্কসিটি, পদ্মা ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস, চিলাহাটি এক্সপ্রেস এবং ঢালারচর-রাজশাহীগামী ঢালারচর এক্সপ্রেস ট্রেনের ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে স্টপেজ রয়েছে। এছাড়া ঢাকা-পঞ্চগড়গামী একতা ও ঢাকা-বুড়িমারীগামী বুড়িমারী এবং পঞ্চগড়-ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনও থামে এই স্টেশনে। গুরুত্বপূর্ণ এই রেলওয়ের ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন হয়ে প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৬টি ট্রেন চলাচল করে এবং এসব ট্রেনে হাজারের বেশি যাত্রী ঢাকা সহ বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করে।
সরেজমিনে বাইপাস স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ আয়তনের এই প্লাটফর্মে ১২ থেকে ১৪ বগির আন্তঃনগর কোনো ট্রেন দাঁড়ালে প্লাটফর্ম পূর্ণ হয়ে যায়। কিন্তু যাত্রী ছাউনি না থাকায় শুল্ক মৌসুমে প্রচণ্ড রোদের তাপ আর বর্ষায় বৃষ্টির পানি মাথায় নিয়ে ট্রেনে ওঠানামা করতে হতো যাত্রীদের । এছাড়াও ট্রেন থেকে প্ল্যাটফর্ম অনেক নিচে থাকায় কামরায় উঠতে ও নামাতে যাত্রীদের কষ্ট করতে হয়। মাঝেমধ্যেই পা পিছলে গিয়ে নিচে পড়ে অনেকে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে কথা হয় ঈশ্বরদী বাইপাস রেল স্টেশনে সিল্কসিটি ট্রেনের জন্য অপেক্ষমাণ ঢাকাগামী যাত্রী রেহেনা সুলতানার সাথে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও যাত্রী ছাউনি নির্মাণের ফলে যাত্রীদের বৃষ্টিতে ভিজে ট্রেনে ওঠার দুর্ভোগ লাঘব হলো।
একই ট্রেনের জন্য অপেক্ষমাণ জাকির হোসেন নামের ট্রেনযাত্রী বলেন, শুধু বৃষ্টিতে ভিজে নয়; এই স্টেশনে এসে তীব্র গরমও সহ্য করতে হয়েছে। যাত্রী ছাউনি নির্মাণের ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ অনেকটাই কমেছে।
ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার সাইফুল ইসলাম জানান, ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলকারী ট্রেনের যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে প্লাটফর্মে জরুরিভাবে শেড নির্মাণ করা হয়েছে। যাত্রীদের আর বৃষ্টিতে ভিজে বা রোদে পুড়ে ট্রেনের কামড়ায় উঠতে হবে না।