ঢাকা রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

আইএইএর প্রতিবেদনে নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠা

রূপপুর থেকে বিদ্যুৎ পেতে ফের অপেক্ষা বাড়লো

রূপপুর থেকে বিদ্যুৎ পেতে ফের অপেক্ষা বাড়লো

বিদ্যুৎ উৎপাদনের চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দীর্ঘ এক দশক ধরে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রোসাটমের তত্ত্বাবধানে অবকাঠামো নির্মাণ শেষে এখন চলছে পরমাণু জ্বালানি ইউরেনিয়াম লোডের প্রস্তুতি। তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে একের পর এক নেতিবাচক খবরে প্রকল্পটি নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ, এলাকাজুড়ে জনমনে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। যদিও প্রকল্প কর্তৃপক্ষের দাবি—আইএইএর প্রতিবেদন বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) কোনো কেন্দ্র নিয়ে গোপনীয় প্রতিবেদন দেয় না। প্রি-ওসার্ট মিশনের মতো পর্যবেক্ষণ শেষে সংস্থাটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে সহযোগিতার লক্ষ্য পূরণ করে আইএইএ।

গত ১০–২৭ আগস্ট পর্যন্ত রূপপুরে আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল প্রি-ওসার্ট মিশন চালায়। মিশন শেষে ওয়েবসাইটে দেওয়া প্রেসনোটে তারা বেশ কিছু সতর্কবার্তা ও নির্দেশনা জানায়। আগামী তিন মাসের মধ্যে তারা চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। ওই প্রতিবেদনের শর্ত পূরণের পরেই জ্বালানি লোডিংয়ের অনুমোদন পাওয়া সম্ভব হবে। ফলে চলতি বছরের ডিসেম্বরেই কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট চালু হওয়ার যে পরিকল্পনা ছিল, তা আর বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

তবে প্রকল্প এলাকায় আইএইএর তথাকথিত ‘গোপন প্রতিবেদন’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা শুরু হওয়ায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি—এটি পরিকল্পিত অপপ্রচার, যার মাধ্যমে রূপপুর প্রকল্পকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে।

সূত্র জানায়, প্রায় ১ হাজার ৭০০ নন-নিউক্লিয়ার টেস্টের মধ্যে এখনো অর্ধেকের বেশি বাকি। একই সঙ্গে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ও উপকরণে অসংগতি ধরা পড়েছে, যা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে আইএইএ। সেফটি ভালভ স্থাপন, বিকিরণ প্রতিরোধক তার ব্যবহার, মানসম্মত কেবল ও উপকরণ সংযোজন—এসব ক্ষেত্রেই ত্রুটির কথা উল্লেখ করেছে তারা। অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, ইমারজেন্সি রেসপন্স ও কারিগরি ধারাবাহিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংস্থাটি।

প্রকল্প কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে, এসব সুপারিশ ও সতর্ক নির্দেশনা পাওয়া মানে হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াটি আরও শক্তিশালী হওয়া। নিরপত্তায় বিন্দুমাত্র ত্রুটি রেখে প্রকল্প চালুর কোনো সুযোগ নেই।

নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. জাহেদুল হাছান বলেন, ‘রূপপুর যাতে শতভাগ নিরাপদ থাকে, সেজন্যই আইএইএর প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে এবং কমিশনের অনুমোদন পেলে জ্বালানি লোড করা হবে। তার আগে কেন্দ্র চালুর কোনো প্রশ্নই আসে না।’

তিনি আরও জানান, অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা শেষ হয়েছে, বাকি পরীক্ষাগুলো খুব অল্প সময়ের। প্রি-ওসার্ট মিশনের পর্যবেক্ষণ ধাপে ধাপে সমাধান করা হবে।

তার ভাষায়, ‘অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের জন্য যে প্রতিবেদন আইএইএ দিয়েছে, তা অনেক ভালো।’

অপেক্ষা বাড়লো,বিদ্যুৎ পেতে,রূপপুর থেকে
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত