
সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে রোপা আমন ধানের গাছে গোড়া পচন ও মাজড়া পোকার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই অনেক মাঠে ধানের জমিতে এ পোকার বিস্তার ঘটছে। এ আক্রমণ প্রতিরোধে কৃষকেরা জমিতে বিভিন্ন কীটনাশক স্প্রে করছেন, তবে এতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকেই।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ৭৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়েছে। মাঠে মাঠে ধানের সমারোহে সবুজের মনোরম দৃশ্য তৈরি হলেও গত দুই সপ্তাহ ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় পচন রোগ ও মাজড়া পোকার আক্রমণ ধরা পড়েছে। আক্রান্ত গাছে গোড়া সাদা হয়ে যাচ্ছে, আর মাজড়া পোকা কান্ড কেটে দিচ্ছে। এতে ধানের ক্ষতি হচ্ছে ব্যাপকভাবে।
বিশেষ করে তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর ও সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় আক্রমণ বেশি দেখা গেছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকেরা অনুমোদিত কীটনাশক—এস্পায়ার (তরল), লোভাল পাউডার ইত্যাদি ব্যবহার করছেন। পানিতে মিশিয়ে এসব স্প্রে করার ফলে কিছু ক্ষেত্রে পচন ও পোকার দমন হচ্ছে। তবে কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকেরা সমস্যায় পড়ছেন। অনেকেই কৃষি বিভাগের পরামর্শে আলোর ফাঁদ ব্যবহার করছেন।
উল্লাপাড়ার উলিপুর গ্রামের কৃষক খবির (৪২) ও আমডাঙ্গা গ্রামের বাবলু (৫৯) জানান, প্রতিবছরই এ সময় ধান ক্ষেতে পচন ও পোকা দেখা দেয়। এজন্য বাধ্য হয়ে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। তবে বাজারে দাম বেশি থাকায় খরচ সামলানো কষ্টকর হয়ে পড়ছে।
স্থানীয় কৃষিবিদরা বলছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন ও জমিতে পানি জমে থাকা, সঙ্গে অতিরিক্ত সার প্রয়োগের কারণে এ রোগ দেখা দেয়। তবে এটি ভয়াবহ কোনো আক্রমণ নয়; অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগ করলে সহজেই দমন করা সম্ভব।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আ. জা. ম. আহসান শহীদ সরকার ‘আলোকিত বাংলাদেশ’কে বলেন, ‘রোপা আমন ক্ষেতে মাজড়া পোকা ও পচন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কৃষকদের আমরা নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি এবং অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছি। অনেক জায়গায় ইতোমধ্যে সফলভাবে দমন হয়েছে। তাই কৃষকের উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।’