ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কৃষি জমি নষ্ট করে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও বিক্রি

কৃষি জমি নষ্ট করে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও বিক্রি

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক স্থানে বিশাল এলাকার কৃষি জমি নষ্ট করে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের হিড়িক পড়েছে। এতে উপজেলা প্রশাসনের অভিযানের ভূমিকা নিস্ক্রিয় দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে ড্রেজার মালিক ও বালু ব্যবসায়ীদের কারণে বিপুল সংখ্যক ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, কৃষি জমি নিয়ে তারা শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। এছাড়াও ভূখন্ডের ভারসাম্যও হুমকির মুখে রয়েছে। ড্রেজারের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ও কৃষি জমি রক্ষায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকার শতশত ভুক্তভোগী কৃষকরা।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার সাচার ও বিতারা ইউনিয়নের বুজড়ীখোলা, রাগদৈল, দুর্গাপুর, বাইছারা ও বিতারার ঘুগড়াবিলে প্রায় ১২টি অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে ভূমিদস্যুরা। উপজেলার সবচেয়ে বড় ফসলি মাঠটি অবৈধ ড্রেজার মেশিনের দখলে থাকায় ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ বা অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে না। পাশবর্তী পাথৈর ইউনিয়নের ভূমি অফিসের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে মিয়াজী বাড়ির সাথে ফসলি মাঠ থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন প্রভাবশালী ইকবাল হোসেন। একই ইউনিয়নের আটোমোড় বাজারের উত্তর-পশ্চিম পাশে আরেকটি প্রভাবশালী মহল অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছেন।

কচুয়া উত্তর ও সদর দক্ষিণ ইউনিয়নের তেতৈয়া, দোয়াটি, ঘাগড়া ও রাজাপুর ফসলি মাঠেও পাঁচটি অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। পালাখাল মডেল ইউনিয়নের কচুয়া-সাচার সড়কের পশ্চিম পাশে বাছাইয়া আলী আশ্রাফ ব্রিকফিল্ডের সাথে ফসলি জমি নষ্ট করে দীর্ঘদিন ধরে একটি অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেননি।

তেতৈয়া গ্রামের কৃষকরা জানান, কয়েক বছর ধরে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন চলছে। উপজেলা প্রশাসন কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করলেও পরবর্তীতে প্রভাবশালী লোকজনের মাধ্যমে পুনরায় অবৈধ কার্যক্রম চালু হয়েছে।

বজুরীখোলা ও সাচারের কৃষকরা বলেন, ভূমি অফিস, সাচার পুলিশ ফাঁড়ি ও কিছু সংবাদকর্মীদেরকে ম্যানেজ করে একাধিক স্থানে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বছরের পর বছর বালু উত্তোলন হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী ঘুগড়াবিল এখন নদীর মতো পরিণত হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু নাছির বলেন, “উপজেলায় কেউ ফসলি জমি নষ্ট করে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বালু উত্তোলন ও বিক্রি,ড্রেজার দিয়ে,কৃষি জমি নষ্ট করে
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত