
দুই দিন পার হলেও এখনও বদরের কোনো সন্ধান মেলেনি। গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে বেনীপুর সীমান্তের শূন্য রেখা থেকে বদর (২৮) নামের এক বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে যায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বদর জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের বেনিপুর গ্রামের মো. করিমের ছেলে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বদর টাকার বিনিময়ে সীমান্ত দিয়ে রাতের আধারে অবৈধভাবে মানুষ পারাপার করত। বিশেষ করে ছাত্র-জনতার গণঅভু্যত্থানের পর থেকে এই সীমান্ত দিয়ে বদরসহ বেনীপুর গ্রামের বেশ কয়েকজন যুবক মিলে ভারতীয় কাঁটাতার কেটে মানুষ পারাপার করে আসছিল। ঘটনার দিন বদরসহ ৫-৬ জন সীমান্তে যায়। এসময় ভারতের লোনা গঞ্জ ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ সদস্যরা তাকে শূন্য রেখা থেকে ধরে নিয়ে যায়। এসময় অন্যরা পালিয়ে যায়। আর বদরকে আটক করে লোনা গঞ্জ ক্যাম্পে নিয়ে যায় বিএসএফ। ঘটনার পর থেকে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকে বদরের বাড়িতে ভিড় করতে শুরু করেছে গ্রামবাসীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের বেশ কিছু মানুষ অভিযোগ করে বলেন, বদর এবং তার সাথে বেশকিছু ব্যক্তি মিলে ভারতে ধুর পাচার (মানব পাচার) করে থাকেন। তারা পারাপার করতে মাথা প্রতি ১০-১২ হাজার টাকা করে নেয়।
সরেজমিনে বদরের বাড়িতে দেখা যায়, মাটির তৈরি ঘর। মা-বাবা, স্ত্রী ও একটি সন্তান থাকলেও গ্রামের অনেকে জানে বদরের তিনটি সন্তান আছে। বাকি একটি ছেলে ও একটি মেয়ে তার স্ত্রীর ও বড় ভাইয়ের। তবে বাচ্চা দুটির মা-বাবা মৃত্যুবরণ করায় বদর তার নিজের সন্তান হিসেবে লালন-পালন করছে। এদিকে বদরের ভাগ্য পরিবর্তন না হলেও পরিবর্তন হচ্ছে অন্য কোনো ব্যক্তির। বিষয়টি প্রশাসন একটু নজর দিলে বেরিয়ে আসবে মূল হোতা।
বদরের বাবা মো. করিম বলেন, ‘আমার ছেলেকে বিএসএফ ধরে নিয়ে গেছে। প্রথমে গ্রামের লোকজন আমাদের খবর দেয় তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। কিন্তু সে বেঁচে আছে। আমরা বিজিবি’র কাছে আবেদন জানিয়েছি যেন তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। মহেশপুর-৫৮ বিজিবির পরিচালক অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. রফিকুল আলম বলেন, আটককৃত বদরের বিষয় বিজিবি-বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠকের বিষয়ে জানানো হয়েছে। তারা কোনো সাড়া দেয়নি।