
সিরাজগঞ্জে এবার ব্রি-১০৩ আগাম জাতের রোপা আমন চাষাবাদে বাম্পার ফলনের আশা করছেন বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা। ইতোমধ্যেই এ ধান পাকতেও শুরু করেছে। পাখির উপদ্রব ঠেকাতে নেট দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে ধানক্ষেত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে এ আগাম ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কৃষকেরা এ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চাষাবাদ করেছে। জমিতে চারা রোপণের প্রায় ৯০ দিনের মধ্যে এ ধানের উৎপাদন হয়ে থাকে। এ কারণে কৃষকেরা আগাম জাতের রোপা আমন চাষে ঝুঁকে পড়েছে।
এ ধান সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে উল্লাপাড়া, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, কামারখন্দ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এবং যমুনা তীরবর্তী ৫টি উপজেলার চরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে এ রোপা আমন ধান চাষ হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, কয়েক বছর ধরে এ ধানের চাষাবাদ শুরু হয়েছে এবং উৎপাদন বেশি হওয়ায় এ ধানের চাষাবাদও বাড়ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে এ ধান চাষাবাদ করছে কৃষকেরা। সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে প্রতিবছরের ন্যায় এবারো ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে ব্রি-১০৩ ধানের বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। বীজতলা থেকে চারা উৎপাদনের পর জমিতে প্রদর্শন আকারে রোপণ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষকেরাও লাভজনক এ ধানের চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছে।
প্রায় ৩ বছর আগে ধান গবেষণা কেন্দ্র থেকে ব্রি-১০৩ আগাম জাতের ধান নামকরণ করা হয়েছে। এ ধান প্রতি বিঘায় ২৪/২৫ মণ উৎপাদন হয় এবং স্বর্ণা ধানের চেয়ে এ ধান চিকন। এ ধান চাষাবাদে সার ও পানি সেচ কম লাগে এবং এ ধান উৎপদান বেশি ও অনেক আগেই ঘরে আসে।
ইতোমধ্যেই এ ধান বিভিন্ন স্থানে মাঠ জুড়ে পাকতে শুরু করেছে। কিন্তু বিভিন্ন প্রজাতির পাখি এ আধাপাকা ধান খেতে শুরু করেছে। এমনকি অনেক উড়াল পাখি ধান ক্ষেতে বাসাও বেঁধেছে। এসব পাখির উপদ্রব ঠেকাতে ধান ক্ষেতে নেট ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া এ ধানক্ষেতে ডালপালা ও পুতুল বানিয়ে রাখা হয়েছে। আর ২/১ সপ্তাহ পরে এ ধান কাটবে কৃষকেরা।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ব্রি ১০৩ আগাম জাতের ধান চাষাবাদে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের মাঝে এ ধানে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এ জাতের ধান উৎপাদনে প্লট প্রদর্শনও করা হয়েছে। এ ধান চাষাবাদে এবার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং আধাপাকা এ ধান ক্ষেতে বিভিন্ন প্রজাতের পাখির উপদ্রব ঠেকাতে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।