
সিরাজগঞ্জে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে শাহজাদপুরে ভাঙন রোধে ৬৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যেই ৯৩% কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে। এ কাজ বাস্তবায়ন শেষ হলে ভাঙন থেকে মুক্তি পাবে এলাকাবাসী।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (হেডকোয়ার্টার) নাজমুল হোসাইন ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বে নিয়োজিত ওই দুই কর্মকর্তা আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, জেলার শাহজাদপুর, উপজেলার ব্রম্মগ্রাম-হাটপাঁচিল ও তৎসংলগ্ন এলাকার যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ এবং বেতিল স্পার-১ এবং এনায়েতপুর স্পার-২ শক্তিশালীকরণ প্রকল্প (১ম সংশোধিত) বাস্তবায়নে ২০২১-২২ অর্থ বছরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ৬৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড দীর্ঘমেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়নে দরপত্র আহ্বান করে। সরকারি বিধিমতে ৩৫টি প্যাকেজে ৩৫ জন ঠিকাদার নির্বাচিত হন এবং ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু হয়। প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি হলেও নানা জটিলতার কারণে কিছুটা বিলম্ব হলেও যথাসময়ে এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন শেষ হবে। ইতোমধ্যেই এ প্রকল্পের ৯৩% কাজ শেষ হয়েছে।
এ প্রকল্পের ৩৫টি প্যাকেজে ৩৫ জন ঠিকাদারের মধ্যে ২২ জন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাজ কয়েকমাস আগেই শেষ হয়েছে এবং বাকি ঠিকাদারগণের প্যাকেজের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নে এগিয়ে চলছে। ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই অর্থাৎ মার্চ মাসেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে প্রকল্পের কাজ যথানিয়মে দেখাশোনা ও নজরদারি করা হচ্ছে এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম, (বগুড়া সার্কেল), পাউবোর প্রধান প্রকৌশলী মুখলেসুর রহমান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেছেন। জনস্বার্থে এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য নদীর ডানতীর ভাঙন থেকে আবাসিক ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার, সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো ও কৃষি জমি ও রাস্তাঘাট রক্ষা করা। এছাড়া নদীর উজানে এবং ভাটিতে ইতঃপূর্বে সম্পাদিত তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ রক্ষা করা, নদীর বন্যা প্রতিরোধ করা, নদীর গতিপথ পরিবর্তন প্রতিরোধ করা এবং সামাজিক নিরাপত্তাসহ এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে উল্লেখিত এলাকার হাজার হাজার পরিবার, বিভিন্ন স্থাপনা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।
প্রতিবেদকের এক প্রশ্নোত্তরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নে কোন অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, প্রকল্পের কাজ কঠোর নজরদারি ও তদারকির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। এতে নদীর ভাঙনসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অবকাঠামো ও ফসলি জমি ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তদারকি করছেন এবং স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও দায়িত্ব পালন করছেন।
আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।