
সিরাজগঞ্জে বর্ষা মৌসুমে (খরিফ-২) হাইব্রিড কাঁচামরিচের চাষে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমানে বাজারে ভালো দাম থাকায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। লাভজনক এ চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষকেরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার চরাঞ্চলসহ নয়টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ২১৫ হেক্টর জমিতে এ মৌসুমি চাষাবাদ নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে এবার মরিচ চাষ করেছেন কৃষকেরা।
প্রায় দুই মাস আগে জেলার বিভিন্ন স্থানে হাইব্রিড জাতের বিভিন্ন মরিচের বীজ বপন করেন তারা। এ চাষের মধ্যে ‘ফায়ার বক্স’, ‘বিজলী’, ‘সনি’, ‘মানিক’ ও ‘চাটমোহরি’ জাতের মরিচ বেশি চাষ হয়েছে।
যমুনা নদীর তীরবর্তী শাহজাদপুর, বেলকুচি, চৌহালী, কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কাজিপুর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ‘বিজলী’ ও ‘চাটমোহরি’ জাতের মরিচের চাষ বেশি হয়েছে। ইতিমধ্যেই কৃষকেরা এসব ক্ষেত থেকে মরিচ সংগ্রহ শুরু করেছেন।
স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছেন, স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর চরাঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা ভালো দামে মরিচ ক্রয় করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছেন। এতে যেমন কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন, তেমনি ব্যবসায়ীরাও ভালো লাভ করছেন। বর্তমানে হাট-বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। তবে কয়েকদিন আগেও খুচরা বাজারে এর দাম ছিল ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এস.এম. নাসিম হোসেন বলেন, খরিফ-২ সহ অন্যান্য জাতের হাইব্রিড মরিচ সাধারণত উঁচু জমিতে চাষ করা হয়। এবার সদর উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৪৫ হেক্টর জমিতে এই মরিচের চাষ হয়েছে। এ জাতের মরিচ ক্ষেত থেকে আরও দেড় থেকে দুই মাস পর্যন্ত উৎপাদন চলবে। প্রতি বিঘা জমিতে ৭-৮ মণ মরিচ উৎপাদন হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, কয়েক সপ্তাহের অতিবৃষ্টির কারণে কিছুক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যার প্রভাবে গত সপ্তাহে দাম বেড়ে যায়। ইতিমধ্যেই কৃষকেরা পরবর্তী চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে তারা আবারও মরিচের আবাদ শুরু করবেন। ফলে প্রায় বছরজুড়েই বিশেষ করে হাইব্রিড মরিচের চাষাবাদ হয়ে থাকে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ.কে.এম. মঞ্জুরে মওলা আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, প্রতিবছরই লাভজনক এ মৌসুমি মরিচের চাষাবাদ হয়ে থাকে। এবার কৃষকেরা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগ কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা দিচ্ছে। এবার বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বাজারে ভালো দাম থাকায় কৃষকেরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট বলে তিনি উল্লেখ করেন।