
পাবনার ঈশ্বরদীতে অনুমোদনহীন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক দিনদিন বেড়েই চলছে। এতে শহরে সৃষ্টি হচ্ছে ভীষণ যানজট। প্রথমদিকে এই যানগুলো মানুষের যাতায়াত সহজ এবং অনেকের কর্মসংস্থান তৈরি করলেও এখন এগুলো শহরের শৃঙ্খলার জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যানজট ও বিদ্যুতের উপর চাপ বেড়েছে।
জানা গেছে, ২০০৯ সালের দিকে চালু হওয়ার পর ব্যাটারিচালিত এই বাহনগুলো দ্রুত জনপ্রিয় হয়। কিন্তু নিয়ন্ত্রণের অভাবে এখন এগুলো রাস্তায় অবাধে চলছে। এর ফলে যেমন যানজট হচ্ছে, তেমনি সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়েছে। তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই গড়ে ৪ শতাধিক ইজিবাইক রয়েছে।
ঈশ্বরদী পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকায় মোট নিবন্ধিত গাড়ি মাত্র ৮০৬টি। এর মধ্যে ব্যাটারিচালিত ছয় সিটের অটো রিকশা ৩৪টি, মোটা চাকার রিকশা ৫৬৭টি, চিকন চাকার রিকশা ১৬৫টি এবং ভ্যান ৪০টি।
কিন্তু বাস্তবে পুরো উপজেলায় কমপক্ষে ৮ হাজারেরও বেশি ইজিবাইক অটো রিকশা চলছে, যার বেশিরভাগই নিবন্ধনহীন। যদিও ২০০৯ সালের আইন অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে এগুলো নিবন্ধনের কথা, কিন্তু তা ঠিকভাবে মানা হচ্ছে না।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অটো রিক্সাগুলো রাস্তায় যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে এবং এর ফলেই যানজট বাড়ে। ট্রাফিক পুলিশের জনবল কম থাকায় সব সময় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষ যেমন কষ্ট পাচ্ছে, তেমনি অ্যাম্বুলেন্স থেকে শুরু করে অন্যান্য জরুরি গাড়ি চলাচলেও সমস্যা হচ্ছে।
নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই পিএলসির এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, একটি অটো রিকশা চার্জ দিতে প্রায় এক কিলোওয়াট বিদ্যুৎ লাগে। পুরোনো ব্যাটারিতে আরও বেশি বিদ্যুতের দরকার হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি চার্জ দেওয়ায় স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে (গ্রিডে) অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ঈশ্বরদী পৌরসভার সচিব জহুরুল ইসলাম জানান, অনিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনা তাদের জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, আমরা নিবন্ধনের কাজ দ্রুত করার উদ্যোগ নিয়েছি। তবে জনসংখ্যা ও যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বাস্তবায়নে কিছুটা দেরি হচ্ছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে আমরা ট্রাফিক ও ঈশ্বরদী থানা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে নিয়মিত অভিযান চালানোর চেষ্টা করছি। আশাকরি দ্রুতই রাস্তায় যানজট কমানো সম্ভব হবে।