ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জীবননগরে আমন ও রবি মৌসুমে সারের তীব্র সংকট

জীবননগরে আমন ও রবি মৌসুমে সারের তীব্র সংকট

জীবননগরে আমন ও রবি মৌসুমে রাসায়নিক সারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে, যা চাষিদের জন্য বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে। উপজেলার ড্রাগন, মাল্টা, পেয়ারা-সহ বিভিন্ন ফলের চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে। পাশাপাশি মাঠে শীতকালীন সবজি, পেঁপে, কলা, আখ, ধানসহ নানা শস্যের চাষ রয়েছে। কিন্তু এসব ফসলের জন্য প্রয়োজনীয় সার কৃষকরা পাচ্ছেন না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউরিয়া ও এমওপি সার তেমন ঘাটতি নেই। তবে টিএসপি ও ডিএপি সার তীব্রভাবে কমছে। চাষিরা ডিলারের কাছে সার নিতে গিয়ে প্রায়ই খালি হাতে ফিরে আসছেন। অনেক জায়গায় সার কেনার জন্য দীর্ঘ লাইনও দেখা যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, ডিলারদের কাছে সার না থাকলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি দামে সাধারণ কৃষককে সার বিক্রি করছেন।

জীবননগরের উথলী গ্রামের চাষি শামিম হোসেন বলেন, “বৃষ্টির পর জমিতে সার দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। এখন সার প্রয়োগের সঠিক সময়। কিন্তু সার কোথাও পাচ্ছি না। আমার পেয়ারা, আখ, শীতকালীন সবজি ও আমন ধান চাষ রয়েছে। আমার ৩–৪ বস্তা সার দরকার, কিন্তু পাই না।”

খয়েরহুদা গ্রামের কৃষক আসকার আলী বলেন, “টিএসপি সার কেনার জন্য আজ ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে মাত্র ২৫ কেজি সার পেয়েছি। আমার ৭ বিঘা জমি রয়েছে—এতোটুকু সারে কিছুই হবে না।”

ডিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টিএসপি সারের বরাদ্দ চাহিদার তুলনায় কম। বরাদ্দের সার আসলেই ১–২ দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিছু অসাধু খুচরা ব্যবসায়ী সাধারণ মানুষকে কৃষক সাজিয়ে সার ডিলারের কাছ থেকে এনে দোকানে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জীবননগর কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, “জীবননগরে সারের তেমন সংকট নেই। অনেক কৃষক একাধিক গুণ বেশি সার ব্যবহার করছেন। যেখানে ২০ কেজি টিএসপি প্রয়োজন, সেখানে ১০০ কেজি সার ব্যবহার হচ্ছে। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার জমির স্বাস্থ্য নষ্ট করছে এবং উর্বরতা কমাচ্ছে। যদি এভাবে চলতে থাকে, ২০–২৫ বছরের মধ্যে জমি প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারে। সারের ব্যবহার কমিয়ে বেশি করে জৈব সার ব্যবহার করা উচিত। এতে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং সারের সংকটও কমবে।”

সারের তীব্র সংকট,রবি মৌসুম
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত