
যশোরের সীমান্তবর্তী বেনাপোল পোর্ট থানায় ২৪ দিন পার হয়ে গেলেও নতুন কাউকে ওসি (প্রশাসনিক) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ কারণে বেনাপোল পোর্ট থানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে থানার ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এসআই মানিক কুমার সাহা। তবে এই থানায় তদন্ত ওসির পদটি দীর্ঘ ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে শূন্য রয়েছে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর পোর্ট থানার ওসি রাসেল মিয়া বদলি হন। এরপর থেকে ২৪ দিন পার হলেও বেনাপোল পোর্ট থানায় কোনো নতুন ওসি নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে থানা কার্যক্রম কার্যত অভিভাবকবিহীন অবস্থায় চলছে।
বেনাপোল পোর্ট থানার তিনটি ইউনিয়নের মানুষ এখন আইনশৃঙ্খলার অবনতিসহ নানা সমস্যায় ভুগছেন। থানা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কবে নাগাদ নতুন ওসি নিয়োগ দেওয়া হবে—দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। এতে করে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপকর্ম বেড়ে গেছে।
ওসি বদলি ও নতুন ওসি যোগদানে দেরি হলে থানায় প্রশাসনিক শুন্যতা তৈরি হয়, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাধা সৃষ্টি করে। এর ফলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে। থানা প্রধান না থাকায় অনেক স্থানে চুরি, ছিনতাই ও মারামারির মতো ঘটনার পরও তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না থানার পক্ষ থেকে।
সীমান্তবর্তী ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বেনাপোল পোর্ট থানা ভারতসংলগ্ন হওয়ায় এ অঞ্চলে চোরাচালানসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম হয়ে থাকে। সম্প্রতি থানায় ওসি ও তদন্ত ওসি না থাকায় বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় প্রতারণা ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাসপোর্টযাত্রীদের নানা কৌশলে ফাঁদে ফেলে প্রতিদিন এসব অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, অথচ দেখার কেউ নেই।
স্থানীয়রা জানান, ওসির বদলির খবর শোনার পর থেকেই প্রতারক ও অপরাধীরা আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন গ্রামেও একইভাবে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি ভারত থেকে গাঁজা ও ফেনসিডিলের চালান বেড়েছে বলে জানা গেছে। ফলে পুটখালী, বারোপোতা ও শিকড়ী এলাকায় তরুণদের মধ্যে মাদকের প্রবণতাও বাড়ছে।
নাভারণ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, “ডিআইজি সাহেব বা এসপি যখন উপযুক্ত মনে করবেন, তখন বেনাপোল থানায় নতুন ওসি নিয়োগ দেওয়া হবে।”