ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

‘যারা শিবিরের বিরোধিতা করেছিল, তারা আজ ইতিহাস’

‘যারা শিবিরের বিরোধিতা করেছিল, তারা আজ ইতিহাস’

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, “ছাত্রশিবিরের বিরোধিতা যারা করেছিল, তারা আজ ইতিহাসে পরিণত হয়েছে। অনেকে নিষিদ্ধও হয়ে গেছে। কিন্তু তাদের প্ররোচনায় পড়ে একটি শ্রেণি এখনো ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করছে। আগের মতো করেই ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি, যেন তারা সত্য উপলব্ধি করতে পারে।”

সোমবার (১৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ শাখা কর্তৃক আয়োজিত ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষের ‘নবীন বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন’ প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, “তায়েফের ময়দানে শিশুদেরকেও নবী করিম (সা.) এর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাকে অপমান করা হয়েছিল, এমনকি পাথর নিক্ষেপও করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কোনো প্রতিশোধ নেননি; বরং দয়া ও সহনশীলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তারা একদিন বুঝবে, তখন আর এমন করবে না।”

নারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “ইসলাম আগমনের আগে নারীদের অবস্থা ছিল অবমাননাকর। কন্যা সন্তান জন্মালে পিতা-মাতা জীবিত কবর দিত। ইসলাম এসে সেই নারীকেই সর্বোচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘মা সর্বোচ্চ সম্মান পাবেন।’ ছাত্রশিবিরও ইসলামের এই মূল্যবোধে বিশ্বাস করে এবং নারীদের প্রতি যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করতে চায়।”

ভারতকে ইঙ্গিত করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, “অতীতে পূজার সময় কোথাও কোথাও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতো, যেটি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়নি। কিছু বিদেশি প্রচারণায় বলা হয়, আমরা সম্প্রীতি নষ্ট করি, অথচ বাস্তবে তারা নিজেরাই ধর্মীয় বিদ্বেষে জর্জরিত।”

তিনি আরও বলেন, “যারা ১৫ বছর ধরে দেশপ্রেমের কথা বলেছে, তারা দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে, খুন ও গুমের রাজনীতি করেছে। ছাত্রশিবির এমন দেশপ্রেমিক চায় না। আমরা এমন দেশপ্রেমিক তৈরি করতে চাই, যারা অন্যায়, জুলুম ও লুটপাটমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে।”

নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জাহিদুল ইসলাম বলেন, “ছাত্রশিবিরে যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। তবে সংগঠন সম্পর্কে জানতে হলে পড়াশোনা ও অনুসন্ধান প্রয়োজন। ক্যাম্পাসে শিক্ষক ও অভিভাবকরা যেমন পরামর্শ দেবেন, তেমনি নিজ দায়িত্বেও সচেতন হতে হবে। আমরা চাই, তোমরা সফল ও প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে ওঠো।”

তিনি আরও বলেন, “ছাত্রশিবির স্বপ্ন দেখায়, লক্ষ্য ঠিক করে দেয় এবং বাস্তবায়নের দিকনির্দেশনা দেয়। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে যা কিছু করণীয়, তা করতে উৎসাহিত করে।”

জাহিদুল ইসলাম বলেন, “ছাত্রশিবিরকে অনেক সময় নারী বিদ্বেষী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। ইসলাম নারীদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে এবং ছাত্রশিবিরও নারীর অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। এমনকি হিন্দু ভাই–বোনসহ সমাজের সব ধর্ম–বর্ণের মানুষের পাশে থেকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে সংগঠনটি।”

ইসলামী ছাত্রশিবির সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাসুদুজ্জামানের সঞ্চালনায় নবীন বরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, সাতক্ষীরা জামায়াতের আমির উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল হাশেম, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক নোমান হোসেন নয়ন, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক, বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী ইরফান হাসান সাকিব, শহর শিবিরের সভাপতি আল মামুন, শহর শিবিরের সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম, শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় দাওয়া সম্পাদক হাবিবুর রহমান, শহর শিবিরের সেক্রেটারি মেহেদী হাসান, একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী শানজিন নাহার শুভা, তাসনিম আলম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেন।

তারা আজ ইতিহাস,শিবিরের বিরোধিতা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত