ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহ বিভাগে নেওয়ার প্রস্তাব, প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহ বিভাগে নেওয়ার প্রস্তাব, প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

‘আমার মাটি আমার মা, ময়মনসিংহে যাব না’, ‘চাই চাই বিভাগ চাই, টাঙ্গাইলে বিভাগ চাই’, ‘আমাদের দাবি একটাই, টাঙ্গাইলে বিভাগ চাই’— এমন নানা স্লোগানে কেঁপে ওঠে যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্তের গোলচত্বর এলাকা।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবনার প্রতিবাদে স্থানীয় ছাত্র-জনতা ওই এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।

সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তারা যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্তের গোলচত্বর এলাকায় অবস্থান নিয়ে যমুনা সেতু-টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে মহাসড়কের দুই প্রান্তে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং যমুনা সেতুর টোলপ্লাজার টোল আদায়ও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা।

সোমবার সকাল থেকেই যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্তের গোলচত্বর এলাকায় ছাত্র-জনতা জড়ো হতে থাকে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তারা মহাসড়কে বিক্ষোভ শুরু করে এবং টাঙ্গাইল জেলাকে ঢাকা বিভাগেই রাখার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়, ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও যানবাহনের চালকরা।

অবরোধকারীরা জানান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহ বিভাগে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া নতুন মানচিত্রও দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে। তারা বলেন, “কোনভাবেই টাঙ্গাইল জেলাকে ভাগ করা যাবে না, ময়মনসিংহ বিভাগে যুক্ত করা যাবে না। টাঙ্গাইলকে ঢাকা বিভাগেই রাখতে হবে।” অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন তারা।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তারা অবরোধ তুলে নেয়।

আন্দোলনকারী আকবর ও রাশেদ মিয়া বলেন, “টাঙ্গাইল নিয়ে টানাহেঁচড়া চলবে না। টাঙ্গাইল যদি ঢাকা বিভাগে না থাকে, তবে টাঙ্গাইলকেই বিভাগ ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”

ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, “প্রশাসনের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নিয়েছে। বর্তমানে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।”

কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলাম জানান, “আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। পরে তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করে মহাসড়ক ছেড়ে দেয়।”

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা ও চট্টগ্রামকে ভেঙে নতুন দুটি বিভাগ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিল বিগত সরকার। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে। ১১ অক্টোবর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশে নতুন বিভাগ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেখানে কিশোরগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলাকে ময়মনসিংহ বিভাগে যুক্ত করার সুপারিশ রাখা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্তের গোলচত্বর এলাকায় স্থানীয় কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহকে দেশের অষ্টম বিভাগ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন টাঙ্গাইলকে এই বিভাগে যুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল। তবে জেলাবাসীর আন্দোলন ও ২৫ লাখের বেশি গণস্বাক্ষর দেওয়ার পর টাঙ্গাইলকে ঢাকা বিভাগেই রাখা হয়।

মহাসড়ক অবরোধ,প্রস্তাব,টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহ বিভাগে
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত