ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঈশ্বরদীতে সবজি চাষে প্রণোদনা পেলেন ১০০০ কৃষক

ঈশ্বরদীতে সবজি চাষে প্রণোদনা পেলেন ১০০০ কৃষক

ঈশ্বরদীতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে আগাম শীতকালীন সবজির বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের সামনের চত্বরে ঈশ্বরদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের রবি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এই বীজ ও সার বিতরণ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা কৃষি পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান।

উপজেলায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রবি মৌসুমের কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে লাউ, শসা, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন এবং বসতবাড়ির আঙিনায় শীতকালীন শাকসবজি—বেগুন, লাল শাক, পালং শাক, মটরশুটি, লাউ, মুলা, বাটিশাকের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।

প্রণোদনা হাতে পেয়ে উপজেলার গোপালপুর উত্তরপাড়া এলাকার কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, “প্রতিবার আমাদের বীজ ও সার কিনতেও অনেক টাকা খরচ হয়। এবার সরকার থেকে বিনামূল্যে সহায়তা পাওয়ায় সেই খরচ বেঁচে গেল। ১০ কাঠা জমিতে মরিচের আবাদ করেছি। এখন মরিচে ফুল ধরতে শুরু করেছে। কয়েক দিন পরই বিক্রি করা যাবে। ধুন্দলের মাচায় আগাম লাউ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছি। যদি সময়মতো বাজারে তুলতে পারি, ভালো দাম পাব।”

উপজেলার গোপালপুর গ্রামের সবজি চাষী সেকেন্দার আলী বলেন, “আগাম শাকসবজি লাগানোর কাজ শুরু করেছি। সময়মতো ফসল তুলতে পারলে পরিবারে স্বচ্ছলতা আসবে।”

প্রণোদনা হাতে পেয়ে অন্যান্য কৃষকরাও জানান, বিনামূল্যে সরকারি এই সহায়তা পেয়ে তারা আগাম সবজি চাষে উৎসাহিত হয়েছেন। সময়মতো বাজারে সবজি তুলতে পারলে ভালো দাম পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

উপজেলার আরামবাড়িয়া ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও জেলার শ্রেষ্ঠ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল আলীম জানান, “আগাম সবজি চাষ এখন অত্যন্ত লাভজনক একটি পদ্ধতি। আমার ব্লকের গোপালপুর উত্তরপাড়ার এলাকার অধিকাংশ কৃষক আগাম মুলা, গাজর ও বেগুনের আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ মো. আব্দুল মমিন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোছা. আকলিমা খাতুন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পি আই ও) মো. সিহাব উদ্দিন, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার মো. রাজিবুল হাসান ও উপজেলা মৎস্য অফিসার আব্দুর রহমান।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রণোদনায় বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রাপ্ত কৃষকগণ এবং জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আব্দুল মমিন জানান, “চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ঈশ্বরদী উপজেলায় মোট ১০০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের জন্য এই প্রণোদনা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার ২৫০ জন কৃষককে বিনামূল্যে বসতবাড়িতে চাষযোগ্য শীতকালীন শাকসবজির বীজ প্রদান করা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “উপজেলায় শসা ১৭০ জন, মিষ্টি কুমড়া ৩১৫ জন, বেগুন ১৬০ জন, লাউ ১০৫ জন কৃষকের মধ্যে প্রণোদনার বিনামূল্যে প্রত্যেক কৃষককে বীজ এবং ১০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হচ্ছে। আগাম শীতকালীন সবজি চাষ কৃষকদের জন্য এখন আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। মৌসুমের আগে শাকসবজি তুলতে পারলে কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছেন।”

১০০০ কৃষক,প্রণোদনা পেলেন,ঈশ্বরদীতে সবজি চাষ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত