
মুন্সীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় দায়ের করা তিনটি হত্যাসহ ১০টি মামলার আসামি সাবেক কাউন্সিলর সাজ্জাত হোসেন সাগরকে (৩১) গ্রেপ্তার করেছে মুন্সীগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তার সাথে থাকা অপর সহযোগী ছাত্রলীগ নেতা মো. সাগর মিয়াকে (২৯) গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে ঢাকা মহানগরের ডেমরা এলাকা থেকে মুন্সীগঞ্জ জেলার ডিবি পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত সাজ্জাত হোসেন সাগর মুন্সীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। সাজ্জাত হোসেন সাগর মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার চর শিলমন্দি গ্রামের বাসিন্দা। গত বছরের ৪ আগস্টে মুন্সীগঞ্জে তিনটি হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেন এবং প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেন সাগর। অপর গ্রেপ্তারকৃত সাগর মিয়া মিরকাদিম পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। সাগর মিয়া রামগোপালপুর চিশতিবাড়ির বাসিন্দা।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সাজ্জাত হোসেন সাগর। দক্ষিণ কোরিয়ায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটকের পর তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। দেশে ফিরে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন তিনি। বুধবার দিবাগত রাতে মুন্সীগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাজ্জাত হোসেন সাগরকে তার সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. ফিরোজ কবির বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় হত্যা ও সাতটি মামলাসহ মোট ১০টি মামলা রয়েছে সাজ্জাদ হোসেন সাগরের বিরুদ্ধে।
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জ শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত দিনমজুর সজল হত্যা মামলায় মুন্সীগঞ্জ শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন সাগরের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলি আদালতে তাকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুন্সীগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক সজিব দে। পরে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমান তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত বছরের ৪ আগস্ট সকালে মুন্সীগঞ্জ শহরের কৃষি ব্যাংক চত্বর এলাকায় এক দফার দাবিতে আন্দোলনে নামে ছাত্র-জনতা। সাজ্জাদ প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেয় এবং তার নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো হয়। এ সময় সজল মোল্লা, রিয়াজুল ফরাজী ও ডিপজল নামে তিনজন দিনমজুর গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন দুই শতাধিক ছাত্র-জনতা।