
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার চাঞ্চল্যকর শাশুড়ী হত্যা মামলায় গৃহবধু আফরোজা খাতুনকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেইসাথে ১ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সে কামারখন্দ উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের স্ত্রী এবং তার পরকীয়া প্রেমিক ডা. লিয়াকত হেসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সেইসাথে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি বেলকুচি উপজেলার সুবর্ণসাড়া গ্রামের ওসমান ডাক্তারের ছেলে।
রোববার বিকেলের দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-তৃতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এ রায় দেন। এ সময় গৃহবধূ পলাতক থাকলেও পরকীয়া প্রেমিক উপস্থিত ছিলেন। ওই আদালতের অতিরিক্ত পিপি হামিদুল ইসলাম দুলাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি মামলার বরাত দিয়ে আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, উক্ত গৃহবধূ ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করছিল এবং সে বেপরোয়া ভাবে চলাফেরা করত। এ নিয়ে স্বামীসহ পরিবারের লোকজনের সাথে কলহ লেগেই থাকত। এদিকে আফরোজার স্বামী আব্দুল মালেক ২০০৬ সালে মারা যান।
পরবর্তীতে আফরোজা বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে পরিবারের লোকজন ওই গৃহবধূকে সন্দেহ করে এবং গৃহবধূ এ বিষয়ে বুঝতে পেরে প্রতিশোধ নেওয়ার ষড়যন্ত্র করে।
একপর্যায়ে ২০১২ সালের ১৭ অক্টোবর ওই গৃহবধূ শ্বশুর বাড়িতে আসে এবং সন্ধ্যার দিকে শাশুড়ি রাবিয়া খাতুনকে নিয়ে বের হয় এবং তাকে নিয়ে আর ফিরে আসেনি। পরদিন বাড়ীর পাশে ব্রীজের ডোবার মধ্যে থেকে শ্বশুড়ির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে নিহতের স্বামী শেখ সুলতান বাদী হয়ে গৃহবধূ ও পরকীয়া প্রেমিকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে বেলকুচি থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় পুলিশ গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করলে সে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয় এবং এ মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৫ সালের ১ জুলাই ওই ২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
দীর্ঘ শুনানি ও স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিজ্ঞ বিচারক উল্লেখিত রায় ঘোষণা করেন।