ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কিশোরগঞ্জে চাষ হচ্ছে গাছ আলু, ভালো ফলনে খুশি কৃষক

কিশোরগঞ্জে চাষ হচ্ছে গাছ আলু, ভালো ফলনে খুশি কৃষক

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে গাছ আলু। এক সময় গ্রামে বাড়ির আঙ্গিনার গাছে চাষ হতো এ আলু। এবার এ সবজি জমিতে চাষ করে সহজে ভালো ফলন, বাজারে প্রচুর চাহিদা এবং ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক। জেলার তেরোটি উপজেলায় এ আলুর চাষ ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারে বিক্রয়ের জন্য মাঁচায় ঝুলন্ত গাছ আলু সংগ্রহ করছেন কৃষকরা। এ আলুর ঝুলন্ত দৃশ্য দেখতেও মনোরম। গেলো চার বছর ধরে এমন দৃশ্যের দেখা মিলে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার কৃষি জমিতে। বছরের এপ্রিল মাসে রোপণ করা এ আলুর ফলন পাওয়া যায় আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত।

গাছ আলু অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে ও অল্প পরিশ্রমে অধিক লাভজনক হওয়ায় পাকুন্দিয়া উপজেলার চাষীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

গাছ আলু চাষী জামাল মিয়া বলেন, “আমি গাছ আলু রোপণ করেছি আট শতাংশ জমিতে। দুই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত ১২ হাজার টাকার আলু বিক্রয় করেছি। আশা করছি আরও কিছু বিক্রয় করতে পারবো। এই গাছ আলু চাষ করে আমরা খুবই লাভবান। ব্যবসায়ীরা জমি থেকেই কিনে নিয়ে যায়। এ আলুর দাম এবং চাহিদা অন্যান্য আলুর চেয়ে দ্বিগুণ।”

চাষী আবুল কালাম বলেন, “আমরা বাড়ির আশেপাশের গাছে এ আলু রোপণ করতাম। এখন জমিতে চাষ করছি, ভালো ফলন হয়, ভালো দামও আছে। এই গাছ আলু দুই-তিন বছর যাবত চাষ করছি। খুবই লাভবান হচ্ছি। আমাদের দেখাদেখি আরও কৃষক চাষ করছে। আশা করি সবাই লাভবান হবে।”

অন্যান্য সবজির সাথী ফসল হিসেবে ফলানো যায় গাছ আলু। এপ্রিল মাসের শুরুতে রোপণ করে একই জমির মাঁচায় কুমড়া, চিচিঙ্গা ও ঝিঙা ফলানোর পর আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে ফলন আসে গাছ আলুর। মিশ্র ও রিলে পদ্ধতিতে বিনা খরচে গাছ আলু আবাদ করা সম্ভব বলে জানালেন কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডক্টর সাদিকুর রহমান।

তিনি বলেন, “পান আলু বা গাছ আলু একটি নতুন সবজি। এটা আগে মানুষের বাড়িতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে চাষ হতো। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সারাদেশে এটা চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে পাকুন্দিয়া উপজেলায় এ বছর ৪০২ হেক্টর জমিতে গাছ আলু আবাদ হয়েছে। আমরা আশা করছি ৬ হাজার টন উৎপাদন হবে, যার বাজার মূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ সবজি, কারণ এ সময় সবজির সংকট থাকে। ঐ মুহূর্তে এই সবজি মানুষের চাহিদা পূরণ করতে পারছে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি, জেলার সবগুলো উপজেলায় যেন এটা সম্প্রসারণ করা যায়।”

খুশি কৃষক,ভালো ফলন,গাছ আলু,কিশোরগঞ্জ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত