ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চুয়াডাঙ্গায় ১ টাকার গোল্লা তৈরি করে চলছে ৩৮ বছরের সংসার

চুয়াডাঙ্গায় ১ টাকার গোল্লা তৈরি করে চলছে ৩৮ বছরের সংসার

বর্তমান সময়ে যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া, তখনো দৃঢ় মনোবল ও পরিশ্রমের মাধ্যমে টিকে আছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানাধীন বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া নতুন পাড়ার প্রবীণ দম্পতি আকছেদ আলী ও তার স্ত্রী ছকিনা বেগম। দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে তৈরি করছেন ১ টাকা মূল্যের এই গোল্লা। এই ছোট্ট পণ্যই তাদের সংসার চালানোর একমাত্র অবলম্বন।

আকছেদ আলী জানান, জীবনের শুরুতে এই ছোট্র টং দোকান দিয়ে চায়ের পাশাপাশি গোল্লা তৈরির কাজ শিখেছিলেন তিনি। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত তিনি সেই ঐতিহ্যবাহী পেশাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন।

তিনি বলেন, “এখন সবকিছুর দাম বাড়ছে, কিন্তু আমি এখনো ১ টাকায় গোল্লা বিক্রি করি। এতে খুব বেশি লাভ না হলেও, আমাদের সংসার চলে যায়— এইটুকুই শান্তি।”

আকছেদ আলীর হাতে তৈরি গোল্লা স্থানীয় গ্রামে বেশ জনপ্রিয়। ফজরের নামাজ পড়ে ভোর থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত এ গোল্লা বানায়। গোল্লা বানাতে বানাতে প্রায় ২-৩ গ্রামের মানুষ কিনতে ভীড় জমায়।

গোল্লা কিনতে আসা রতিরামপুর গ্রামের বসির উদ্দিন জানান, তিনি তার পরিবারের সদস্যদের জন্য গোল্লা কিনতে এসেছেন। এই গোল্লা বেশ সুস্বাদু সে কারণেই তিনি এই এক টাকার গোল্লার ভক্ত।

আকুল্দবাড়ীয়া গ্রামের ইউপি সদস্য টাইগার জানান, আকছেদ আলী দীর্ঘ ৩৮ বছর এই রসগোল্লা বিক্রি করেছেন ১ টাকা দরে।

তিনি আরও জানান, আকছেদ আলী এ পেশা সেবা হিসেবে নিয়েছেন। কেউ যদি খুশি করেও বেশী টাকা দিতে চান তাও তিনি (আকছেদ) গ্রহণ করেন না।

আকছেদ আলী জানান, দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে এ পেশার সাথে আছি বাকী জীবনটা এভাবেই কাটাতে চাই।

অনেকে পুরোনো দিনের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য এখনো তার তৈরি গোল্লা কিনছেন এলাকার মানুষ।

স্থানীয় উদ্যোক্তা সজল আহমেদ জানান, আকছেদ আলী ও তার স্ত্রীর এই পরিশ্রম ও আত্মনির্ভরতার গল্প আজ অনুপ্রেরণার উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাজের তরুণ প্রজন্মও তাদের দেখে শিখছে পরিশ্রমের মর্যাদা ও আত্মনির্ভরতার গুরুত্ব।

গোল্লা,সংসার,চুয়াডাঙ্গা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত