
লালমনিরহাটের নদ-নদীগুলোর চরে যেন সবুজের সমারোহ। এখন যেদিকে দু'চোখ যায় সবুজ আর সবুজ। কৃষকদের রোপিত সবজি ক্ষেত সবুজ বিপ্লব ঘটেছে।
জেলার তিস্তা, ধরলা, রত্নাই, স্বর্ণামতি, শিংগীমারী, সানিয়াজান, ত্রিমোহনী, সাকোয়া, মরাসতি, ধোলাই, গিদারী, ছিনাকাটা নদীগুলোর রূপালি বালুচরে নানাবিধ ফসলের চাষাবাদে কৃষি কাজে এসেছে এবং তা এখন সবুজ বিপ্লবের আকার নিয়েছে।
তিন মাস আগেও যে নদীতে ছিল অথৈ পানি, মানুষের চোখ-মুখে ছিল বিষণ্নতার ছাপ, এখন সেই নদীর বুকে সবুজের বিপ্লব। নদী এখন আর নদী নেই, যেন বিস্তীর্ণ বালুচর। আর সেখানেই আগামীর স্বপ্ন বুনছেন নদীপাড়ের মানুষ।
সবকিছু ঠিক থাকলে প্রায় কয়েক কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হবে লালমনিরহাট জেলার এসব জেগে ওঠা চর থেকে।
৫ উপজেলার এসব নদীর পাশে জেগে উঠেছে চর, ফসলে ফসলে ভরে গেছে বালুময় প্রান্তর। এসব চরে ধান, ভূট্টা, আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, কুমড়া, লাউ, পিঁয়াজ, মরিচ, রসুন, টমেটো, সরিষা, পালংশাক, লালশাক, তামাকসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করে কৃষকরা এখন স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে।
চরের বালুর উপর পলি জমে, জেলার নদীর তীরবর্তী জনসাধারণ চরে নানাবিধ পদ্ধতিতে ফসল ফলানো শুরু করেছে। বানের পানিতে সম্বল হারানো মানুষগুলো এখন ঘুরে দাঁড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভাবনার ফসল উৎপাদনে।
লালমনিরহাটের নদীগুলোর চর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদীর ভাঙনের শিকার নিঃস্ব পরিবারগুলো জেগে ওঠা চরে নানাবিধ ফসল চাষ করে আবারও স্বাবলম্বী হচ্ছে। এসব ফসল চাষ করে অনেকটা সফলতাও পেয়েছে অনেকে। এখন আর তাদের সংসারে আগের মতো অভাব-অনটন নেই বললেই চলে। সংসারে ফিরে এসেছে স্বচ্ছলতা।
মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা গ্রামের রত্নাই নদী বিধৌত এলাকার কৃষক কমল কান্ত বর্মন ও নোহালী গ্রামের তিস্তা নদী বিধৌত এলাকার কৃষক মো. জহির আলী বলেন, “রত্নাই ও তিস্তা নদীর বালুচরে বিভিন্ন ফসল চাষ করে সফলতা পেয়েছি। এখন আর জমি পতিত থাকছে না। সব জমিতেই ফসল ফলছে। আমরাও বাড়তি আয় করছি।”
কুলাঘাট ইউনিয়নের চর খাটামারী গ্রামের ধরলা নদী বিধৌত এলাকার কৃষক এস এম হাসান আলী বলেন, “ধান, ভূট্টা, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, শসা, করলা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এতে করে কৃষকরা এখন আর অলস সময় কাটাচ্ছে না। সেই সাথে ফসল ফলিয়ে আয় করেছে।”
লালমনিরহাটের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অপূর্ব বলেন, “আমরা আমাদের অবস্থান থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকি। যাতে তারা বেশি লাভবান হতে পারে।”