
পাবনায় শীত জেঁকে বসেছে। ঘন কুয়াশা এবং হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টা ধরে সূর্যের দেখা নেই।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর পর্যন্ত প্রকৃতি ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে। তাপমাত্রার পারদ ক্রমশ নিচে নামছে। পাবনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে।
হাড়কাঁপানো শীতে পদ্মা-যমুনা নদীর চরাঞ্চলের ২ লক্ষাধিক মানুষসহ অন্তত ৫ লক্ষাধিক মানুষ কষ্ট পাচ্ছেন। দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শীতে কাজ করতে না পারায় মানবেতর দিনযাপন করছেন তারা। শীতার্ত মানুষের মধ্যে গরম কাপড়ের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
পাবনার ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক নাজমুল হোসেন জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি থেকে ১২ ডিগ্রিতে ওঠা-নামা করছিল। সোমবার তাপমাত্রার পারদ সর্বনিম্ন ১১ ডিগ্রিতে নেমে আসে।
এদিকে শীতজনিত ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে শিশু এবং বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ২ শতাধিক শিশু ও বয়স্ক মানুষ ভর্তি হয়।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ১১৫ জন শীতজনিত রোগী ভর্তি হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের চাপ বেড়েছে।
এছাড়া প্রচণ্ড শীতে চরাঞ্চলের বাসিন্দা ও শ্রমজীবী মানুষ পড়েছেন মহাবিপাকে। তারা ঠিকমতো কাজে যেতে পারছেন না। চরাঞ্চলসহ শীতার্ত মানুষের মধ্যে গরম কাপড়ের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
পাবনা জেলা প্রশাসনের ত্রাণ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সচিবরা জানান, পাবনার পদ্মা ও যমুনা নদীর চরাঞ্চলের ২ লাখসহ জেলায় কমপক্ষে ৫ লাখ শীতার্ত মানুষের গরম কাপড় দরকার। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি কোনো তরফ থেকেই গরম কাপড় বা কম্বল দেওয়া হয়নি।
এদিকে স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষ গরম কাপড় কিনতে শহরের পুরাতন কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন। কিন্তু পুরাতন কাপড়ের দামও বেড়ে গেছে অস্বাভাবিকভাবে। এবারের হাড়কাঁপানো শীতে পদ্মা-যমুনা বিধৌত পাবনার শীতার্ত মানুষের দুঃখের যেন শেষ নেই।