বাংলা রঙ্গমঞ্চের কিংবদন্তি চরিত্র ‘নটী বিনোদিনী’র জীবনকাহিনী সেলুলয়েডে তুলে ধরতে সফল হয়েছেন রুক্মিণী মৈত্র। সেই সাফল্যের স্বীকৃতি এবার এল আরও বড় মঞ্চ থেকে। ১৫তম দাদাসাহেব ফালকে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতলেন রুক্মিণী মৈত্র।
গত এপ্রিলেই ‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’ সিনেমাটি ৭৫ দিনের রেকর্ড পার করে পৌঁছে গিয়েছিল ভারতের উপরাষ্ট্রপতি ভবনে। সেখানে সিনেমাটি ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছিল। এবার সেই প্রশংসার মুকুটে যুক্ত হলো দেশের এক মর্যাদাসম্পন্ন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সম্মান।
রুক্মিণীর এই সাফল্যে সবচেয়ে খুশি তার সহকর্মী এবং প্রেমিক অভিনেতা দেব, যিনি এই সিনেমার প্রযোজকও। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন,“১৫তম দাদাসাহেব ফালকে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতায় রুক্মিণী অসংখ্য শুভেচ্ছা তোমাকে। তোমার শক্তিশালী চিত্রায়ণ আরও অনুপ্রাণিত করুক।”
এই চরিত্রের জন্য রুক্মিণী মৈত্রের প্রস্তুতি ছিল দীর্ঘমেয়াদী ও কঠিন। ২০১৯ সালে পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর থেকেই তিনি এই চরিত্রকে আত্মস্থ করার জন্য পরিশ্রমে ঝাঁপিয়ে পড়েন। শিখেছেন নতুন নৃত্যশৈলী, নিয়েছেন কড়া নাচের প্রশিক্ষণ। সিনেমার প্রচারে দেব নিজেই জানিয়েছিলেন, “রুক্মিণী এতটাই ডুবে গিয়েছিল চরিত্রে যে, ঘুমের মধ্যেও হাতের ভঙ্গিতে নাচের মুদ্রা ফুটে উঠত!”
‘বিনোদিনী- একটি নটীর উপাখ্যান’ মূলত একটি পিরিয়ড ড্রামা, যেখানে তুলে ধরা হয়েছে বাংলার প্রথম পেশাদার অভিনেত্রী বিনোদিনীর জীবনসংগ্রাম, বঞ্চনা ও আত্মমর্যাদার লড়াই। তিন দশকেরও বেশি সময় পর পরিচালক রামকমল সেই উপাখ্যান নতুন করে ফ্রেমবন্দি করেছেন।
রুক্মিণী এই চরিত্রে মঞ্চাভিনয়ের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ থেকে শুরু করে বিনোদিনীর দৃঢ় ব্যক্তিত্ব ও আবেগকে নিখুঁতভাবে রূপ দিতে চেয়েছেন। সেই কঠোর পরিশ্রমেরই ফলস্বরূপ এই সম্মান।
প্রথমবারের মতো একটি ঐতিহাসিক নারী চরিত্রে অভিনয় করে জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি—নিঃসন্দেহে রুক্মিণীর কেরিয়ারে এক মাইলফলক। আর এই সাফল্য যেন বাংলার সিনেমাকেও গর্বিত করেছে।