ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইসরায়েলের ১০ বন্দিকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস। আলোচনা ‘কঠিন’ পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে হামাস বলেছে, ইসরায়েল এখনও ‘একগুঁয়েমি’ দেখিয়ে যাচ্ছে।
ফিলিস্তিনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা লেবাননভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-মায়াদিনকে জানিয়েছেন, গাজা উপত্যকা থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে অনড় রয়েছে হামাস। এই ইস্যুতে আলোচনা আটকে আছে। তিনি জানান, ইসরায়েল চায়, যুদ্ধবিরতিটি সহায়তা ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত হোক।
সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি এখনও অমীমাংসিত জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রাফাহ, খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চল, গাজাসিটির পূর্বাঞ্চল ও উপত্যকার উত্তরে তাল আল-জাতাসহ বেশ কয়েকটি কৌশলগত এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। বিষয়টি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস।
এদিকে, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আলোচনা এগিয়ে চলেছে উল্লেখ করে হামাসের সিনিয়র নেতা তাহের আল-নৌনু বলেছেন, ‘আমরা সর্বশেষ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব শর্তসাপেক্ষে গ্রহণ করেছি এবং আমাদের জনগণের সুরক্ষা, গণহত্যা বন্ধ এবং সম্মানজনকভাবে ত্রাণ প্রবাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নমনীয়তা দেখিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে ইসরায়েলি বাহিনী যেসব এলাকায় অবস্থান করবে, তা এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে ফিলিস্তিনি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত না হয় এবং পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনার পথ সুগম হয়। যুদ্ধ বন্ধ এবং উপত্যকা থেকে পূর্ণাঙ্গ সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে তাদের অবস্থান দৃঢ় বলে জানান এই হামাস নেতা।
এদিকে, ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার ‘ভালো সম্ভাবনা’ রয়েছে। তবে তিনি এ-ও বলেন, ‘এই সপ্তাহ বা পরের সপ্তাহে একটা চুক্তি হতে পারে, নিশ্চিত কিছু নয়। যুদ্ধ ও গাজার মতো ইস্যুতে কিছুই চূড়ান্ত করে বলা সম্ভব নয়।’
অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনাপ্রধান এয়াল জামির বলেছেন, এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেখানে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ১০ জন জীবিত বন্দি এবং ৯ জনের মরদেহ হস্তান্তরের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে এরই মধ্যে গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। বুধবার গাজাজুড়ে চালানো ইসরায়েলি হামলায় ৭৪ জন নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৮ জন নিহত হন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) বিতরণ পয়েন্টে খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে।