থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার মধ্যকার বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় সামরিক সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক বলে জানানো হয়েছে।
থাই সেনাবাহিনীর দাবি, কাম্বোডীয় বাহিনী প্রথমে ভারী অস্ত্র দিয়ে গুলি ছোঁড়ে। তবে কাম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, তারা আত্মরক্ষার্থে পাল্টা জবাব দিয়েছে।
থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রী সোমসাক থেপসুদিন জানান, এখন পর্যন্ত ১১ জন বেসামরিক নাগরিক ও একজন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, কাম্বোডিয়ার হামলায় একটি হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল।
সংঘর্ষের জেরে থাইল্যান্ডের সুরিন প্রদেশের ফানম ডং রাক জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, সিসাকেত ও বুরি রাম এলাকাতেও স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে, কাম্বোডিয়াও শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওইসব এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়েছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ও আসিয়ান (ASEAN)-এর বর্তমান সভাপতি আনোয়ার ইব্রাহিম জানান, তিনি উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বার্তা পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি আশা করি উভয় পক্ষ সরে দাঁড়াবে এবং আলোচনায় বসবে। পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক।”
উল্লেখ্য, উত্তরের একটি সংঘর্ষে মে মাসে এক কাম্বোডীয় সেনা সদস্য নিহত হওয়ার পর থেকে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সীমান্তে থাই সেনারা নতুনভাবে পুঁতে রাখা ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হচ্ছেন বলে দাবি করেছে থাই সামরিক বাহিনী। থাইল্যান্ডের অভিযোগ, এসব মাইন কাম্বোডীয় বাহিনী তাদের ভূখণ্ডে পুঁতে রেখেছে।
এই পরিস্থিতিতে কাম্বোডিয়ায় জাতীয় সামরিক ভর্তি (conscription) পুনরায় চালু করা হচ্ছে। পুরো ঘটনায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের ভূমিকা নিয়েও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এতদিন বিষয়টি চাপ সৃষ্টি ও কূটনৈতিক টানাপড়েনের পর্যায়ে থাকলেও বৃহস্পতিবার তা সরাসরি সামরিক সংঘাতে রূপ নেয়।
সূত্র: আলজাজিরা