ঢাকা রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না জোহরান মামদানি

কেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না জোহরান মামদানি

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক জয় মার্কিন রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায় খুলেছে। তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি এখন পরিবর্তনের প্রতীক— আত্মবিশ্বাসী, স্পষ্টভাষী ও নীতিনিষ্ঠ। অনেকেই তাকে ডেমোক্রেটিক পার্টির ক্যারিশম্যাটিক ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব হিসেবে দেখছেন। কিন্তু যত জনপ্রিয়ই হোন না কেন, একটি সাংবিধানিক কারণে তিনি কখনও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হতে পারবেন না।

সংবিধান যা বলছে মার্কিন সংবিধানের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের প্রথম ধারা অনুযায়ী, “একজন স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণকারী নাগরিক ছাড়া অন্য কেউ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য যোগ্য হবেন না।”

এ অর্থে, কেউ যদি জন্মের সময়ই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক না হন— অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বা আমেরিকান পিতামাতার ঘরে জন্ম না নেন— তবে তিনি কখনও প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না।

মামদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নিয়ম জোহরান মামদানি ১৯৯১ সালে উগান্ডার কাম্পালায় ভারতীয়-উগান্ডান পিতামাতার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মাত্র সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং পরবর্তীতে ২০১৮ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব অর্জন করেন। কিন্তু তিনি “স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণকারী নাগরিক” নন, বরং স্বাভাবিকীকরণের মাধ্যমে নাগরিক হয়েছেন। তাই সংবিধান অনুসারে প্রেসিডেন্ট পদে তার প্রার্থিতা অসম্ভব।

একই কারণে বাদ পড়েছেন আরও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা এই একই সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার কারণে ইলন মাস্ক কিংবা সাবেক ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। এখন সেই অপ্রত্যাশিত তালিকায় যোগ দিয়েছেন মামদানিও। প্রশংসিত, প্রভাবশালী এবং জনপ্রিয় কিন্তু সাংবিধানিকভাবে ওভাল অফিস থেকে তিনি নিষিদ্ধ।জনপ্রিয়তা বা প্রভাব যাই হোক না কেন, “জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব” এই পদটির জন্য অনিবার্য শর্ত।

আইন পরিবর্তনের সম্ভাবনা কতটা? তাত্ত্বিকভাবে সংবিধান সংশোধন করে এই বিধান পরিবর্তন করা সম্ভব। তবে বাস্তবে তা প্রায় অসম্ভব। ২০০৩ সালে রিপাবলিকান সিনেটর অরিন হ্যাচ “ইক্যুয়াল অপরচুনিটি টু গভার্ন অ্যামেন্ডমেন্ট” নামে এমন একটি প্রস্তাব তুলেছিলেন, কিন্তু তা গৃহীত হয়নি।

কারণ, এই বিধান পরিবর্তনে কংগ্রেসের দুই-তৃতীয়াংশ অনুমোদন এবং অঙ্গরাজ্যগুলোর তিন-চতুর্থাংশের সমর্থন প্রয়োজন— যা বাস্তবে অত্যন্ত কঠিন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতারা বিদেশি প্রভাব থেকে রাষ্ট্রকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে এই শর্ত যুক্ত করেছিলেন, এবং দুই শতাব্দীরও বেশি সময় পরও সেটি বহাল রয়েছে।

সূত্র: একোনমিক টাইমস

জোহরান মামদানি,নিউইয়র্ক,মেয়র,যুক্তরাষ্ট্র,প্রেসিডেন্ট,মার্কিন রাজনীতি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত