অনলাইন সংস্করণ
১২:৪০, ০৭ নভেম্বর, ২০২৫
সুদানের দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধ অবসানে অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি তিন মুসলিম দেশ—সৌদি আরব, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত—এই যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এক বিবৃতিতে আরএসএফ জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ‘কোয়াড’ মধ্যস্থতাকারী গোষ্ঠীর প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে তারা প্রস্তুত। যুদ্ধবিরতির মূল লক্ষ্য হলো যুদ্ধের ভয়াবহ মানবিক পরিণতি মোকাবিলা করা এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা জোরদার করা। তবে সুদানের সরকারি সেনাবাহিনী (এসএএফ) এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের আরব ও আফ্রিকাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মাসাদ বোলুস বলেন, উভয়পক্ষ নীতিগতভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোনো পক্ষের আনুষ্ঠানিক আপত্তি পাওয়া যায়নি।
আল জাজিরার খার্তুম প্রতিনিধি হিবা মরগানের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি তিন মাস স্থায়ী হবে এবং তা পরবর্তীতে রাজনৈতিক সমাধানের পথ খুলে দিতে পারে। এর মধ্যে নতুন বেসামরিক সরকার গঠনের সম্ভাবনাও রয়েছে।
তিনি জানান, আরএসএফ বলছে তারা দুই বছরের এই সংঘাতের অবসান চায়। তবে সেনাবাহিনী বরাবরই জানিয়েছে, তারা লড়াই চালিয়ে যাবে এবং আরএসএফ সদস্যদের পুনরায় সমাজে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব নয় বলে মনে করে।
সুদানের সরকারি বাহিনী আরও জানিয়েছে, তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতা চায় না এবং যুদ্ধবিরতির আগে আরএসএফকে দখলকৃত শহরগুলো থেকে সরে যেতে হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, “আমরা শত্রুকে পরাজিত করার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। শিগগিরই আমরা নিহত ও নির্যাতিতদের প্রতিশোধ নেব।”
অন্যদিকে, উত্তর দারফুরের এল-ফাশের শহর দখলের পর আরএসএফের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ওই অঞ্চল থেকে ইতিমধ্যে ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, শহর দখলের সময় একটি শিশু হাসপাতালে অন্তত ৪৬০ রোগী ও চিকিৎসক নিহত হয়েছেন। বর্তমানে আরএসএফ দারফুর ও দক্ষিণ সুদানের কিছু অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে, আর সরকারি সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণে রেখেছে দেশটির উত্তর, পূর্ব ও মধ্যাঞ্চল।