ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

নির্বাচনের পর দায়িত্ব ছাড়তে চাই, রয়টার্সকে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন

নির্বাচনের পর দায়িত্ব ছাড়তে চাই, রয়টার্সকে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন

জাতীয় নির্বাচনের পর পদত্যাগ করার পরিকল্পনা করছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে তিনি নিজেকে অপমানিত মনে করছেন। রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হলেও পদটি মূলত আনুষ্ঠানিক, আর দেশের কার্যনির্বাহী ক্ষমতা থাকে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার হাতে।

তার পদ নিয়ে আলোচনা শুরু হয় ২০২৪ সালের আগস্টে, যখন ছাত্রনেতৃত্বাধীন আন্দোলনের মুখে দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লিতে পালিয়ে যান এবং সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর সাহাবুদ্দিনই তখন রাষ্ট্রের একমাত্র সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ ছিলেন।

৭৫ বছর বয়সী সাহাবুদ্দিন ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

সাহাবুদ্দিন বলেন, তিনি পদত্যাগে আগ্রহী এবং দায়িত্ব থেকে সরে যেতে চান। ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই তার প্রথম গণমাধ্যমে বক্তব্য। তিনি বলেন, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তার দায়িত্বে থাকা উচিত এবং সাংবিধানিক কারণেই তিনি এই পদ ধরে রেখেছেন।

রাষ্ট্রপতি অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস প্রায় সাত মাস ধরে তার সঙ্গে দেখা করেননি। রাষ্ট্রপতির প্রেস বিভাগও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আরও অভিযোগ করেন, গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সব দূতাবাস থেকে তার প্রতিকৃতি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

তার ভাষ্যে, সব কনস্যুলেট, দূতাবাস ও হাইকমিশনে রাষ্ট্রপতির প্রতিকৃতি থাকলেও এক রাতের মধ্যে সবগুলো সরিয়ে ফেলা হয়, যা ভুল বার্তা দেয় যে হয়তো রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেওয়া হবে। এতে তিনি ভীষণ অপমানিত বোধ করেছেন।

সাহাবুদ্দিন আরও জানান, প্রতিকৃতির বিষয়ে ইউনূসকে চিঠি দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি দাবি করেন, তার কণ্ঠ রুদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইউনূসের প্রেস উপদেষ্টারা মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি।

রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। সাহাবুদ্দিনের ভাষ্যে, সেনাপ্রধান তাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে ক্ষমতা দখলের কোনো পরিকল্পনা তার নেই। সামরিক শাসনের ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও সেনাপ্রধান গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।

সাহাবুদ্দিন বলেন, কিছু ছাত্র বিক্ষোভকারী প্রথমদিকে তার পদত্যাগ দাবি করলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কোনো রাজনৈতিক দল তার পদত্যাগের দাবি করেনি। বিভিন্ন জনমত জরিপে ইঙ্গিত মিলছে যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী পরবর্তী সরকার গঠনে এগিয়ে থাকবে।

শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন কি না—এ প্রশ্নের উত্তরে সাহাবুদ্দিন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর থেকে তিনি স্বাধীন এবং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আর যুক্ত নন।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন,রয়টার্স,দায়িত্ব ছাড়তে চাই
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত