ঢাকা বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মিসওয়াক করে নামাজ পড়ার ফজিলত

মিসওয়াক করে নামাজ পড়ার ফজিলত

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি নবীজির (সা.) ভালোবাসা আর দুর্গন্ধের প্রতি ছিল ঘৃণা। তিনি পবিত্র ও পরিচ্ছন্নতার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। অন্যসব কিছুর মতো মুখের পরিচ্ছন্নতাও তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি যখন রাতে ঘুমাতে যেতেন এবং ঘুম থেকে জাগতেন, তখন মিসওয়াক দিয়ে দাঁতগুলো পরিষ্কার করতেন। যাতে দুর্গন্ধ দূর হয় এবং ঘুমের পর কর্মস্পৃহা সৃষ্টি হয়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখনই জিবরাইল (আ.) আমার কাছে আসতেন, তখনই আমাকে মিসওয়াকের নির্দেশ দিতেন। এতে আমি আশঙ্কাবোধ করলাম যে (মিসওয়াক করে) আমি আমার মুখের সম্মুখ দিক ক্ষয় করে দেব।’ (মুসনাদ আহমদ : ২২২৬৯)।

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) বলেন, ‘মহানবী (সা.) রাতে বা দিনে যখনই ঘুম থেকে উঠতেন তখনই অজু করার আগে মিসওয়াক করতেন।’ (আবু দাউদ, মিশকাত : ৩৫২)।

মিসওয়াক করার বৈশিষ্ট্য হলো, এর মাধ্যমে মানুষ সচেতন ও কর্মোদ্যম হয়। হাদিসে এসেছে, ‘নবী (সা.) যখন রাতে (নামাজের জন্য) উঠতেন, তখন তিনি মিসওয়াক করতেন।’ (বোখারি)।

মিসওয়াক ব্যবহারের বহু ফজিলত হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এর মাধ্যমে মুখের পবিত্রতা অর্জিত হয়। দুর্গন্ধ, ময়লা ও অন্যান্য ক্ষতিকর বস্তু থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মিসওয়াক করা মুখের পবিত্রতা ও রবের সন্তুষ্টির কারণ।’ (নাসায়ি)।

নামাজের আগে-পরে মিসওয়াক করার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। এতে নামাজে সওয়াব বেশি পাওয়া যায়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মিসওয়াক করে নামাজ পড়ার ফজিলত মিসওয়াক ছাড়া নামাজ পড়ার তুলনায় সত্তর গুণ বেশি।’ (মুসনাদে আহমাদ : ২৬৩৪০)।

আরেক হাদিসে আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মিসওয়াকের পর দুই রাকাত নামাজ মিসওয়াকের আগের দুই রাকাতের তুলনায় সত্তর গুণ বেশি উত্তম।’ (শুয়াবুল ইমান লিলবায়হাকি : ২৫২০)।।

মহানবী (সা.) কীভাবে মিসওয়াক করতেন, হাদিসে এ বিষয়ে স্পষ্ট বিবরণ রয়েছে। এ বিষয়ে আহমদ ইবনে আবদাহ (রহ.) আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-এর কাছে গেলাম, তখন তিনি মিসওয়াক করছিলেন। মিসওয়াকের এক পাশ তার জিহ্বার ওপর ছিল এবং ‘আ’ ‘আ’ করছিলেন।’ (নাসায়ি : ১/৩)।

হাদিসের আলোকে আলেমরা বলেন, মিসওয়াক নিজ হাতের আঙুলের মতো মোটা এবং এক বিঘত পরিমাণ লম্বা হওয়া মুস্তাহাব, তবে জরুরি বা আবশ্যক নয়। এতে মিসওয়াক ধরতে ও করতে সুবিধা হয়।

মিসওয়াক করার সুন্নতসম্মত পদ্ধতি হলো- ডান হাতে মিসওয়াক নিয়ে ডান দিক থেকে মিসওয়াক শুরু করা। দাঁতে প্রস্থে ও জিহ্বায় লম্বালম্বি মিসওয়াক করা সুন্নত।

লেখক : আলেম ও মাদ্রাসা শিক্ষক

মিসওয়াক,নামাজ,ফজিলত
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত