পৃথিবীতে মানুষকে নিরাপদে বেঁচে থাকার জন্য পূর্ণ নিশ্চয়তা দিয়েছে ইসলাম। এতে মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। অন্যায়ভাবে কোনো মানুষ হত্যা করা বিশ্বমানবতাকে হত্যা করার মতো অপরাধ। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মানুষ হত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ কাউকে (অন্যায়ভাবে) হত্যা করলে সে যেন পৃথিবীর গোটা মানবজাতিকে হত্যা করল। আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবজাতিকে রক্ষা করল।’ (সুরা মায়িদা : ৩২)। অন্য আয়াতে এসেছে, ‘আল্লাহ যে প্রাণ হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করো না।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ৩৩)।
জন্ম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বংশ নিধন নিষিদ্ধ : সমাজে দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের কারণে মানুষ যেন তাদের সন্তানদের হত্যা না করে, সে সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা কোরআনে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। বর্তমান বিশ্বে মানুষ জন্ম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বংশ নিধনের যে কত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তার হিসেব নেই। এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘দারিদ্র্যের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না। আমি তাদের ও তোমাদের রিজিক দেব।’ (সুরা আনআম : ১৫১)।
অন্যায়ভাবে হত্যার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড : অন্যায়ভাবে কেউ কাউকে হত্যা করলে ইসলামের দৃষ্টিতে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এ শাস্তি দুনিয়ায় পেতে হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মোমিনরা! নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান দেওয়া হয়েছে।’ (সুরা বাকারা : ১৭৮)। দুনিয়ার এ শাস্তির পাশাপাশি পরকালে রয়েছে কঠিন শাস্তি। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মোমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম, যেখানে সে স্থায়ী হবে এবং তার প্রতি আল্লাহর গজব ও অভিশাপ এবং তিনি তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত রাখবেন।’ (সুরা নিসা : ৯৩)।
মারামারি ও ঝগড়া-বিবাদ নিষেধ : রাসুলুল্লাহ (সা.) অকারণে মানুষ হত্যাকে কবিরা গোনাহ বলেছেন। তিনি মারামারি ও সশস্ত্র ঝগড়া-বিবাদ থেকে দূরে থাকতে বলেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘দুজন মুসলমান তরবারিসহ (মারণাস্ত্র) পরস্পরের মুখোমুখি হয়ে পড়লে (একজন নিহত হলে), হত্যাকারী ও নিহত উভয় ব্যক্তি জাহান্নামি হবে।’ নিহত ব্যক্তির জাহান্নামি হওয়ার কারণ কী? জিজ্ঞেস করা হলে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কারণ, সেও তো প্রতিপক্ষকে হত্যা করতে উদ্যোগী ছিল। অন্যজনের নিহত হওয়া তো হঠাৎ ঘটে যাওয়া ব্যাপার। তার পরিবর্তে তারই হাতে সেও নিহত হতে পারত।’ (বোখারি : ৩১)।
