ঢাকা রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

অর্থ পাচারকারীদের সঙ্গে সমঝোতার চিন্তা সরকারের

অর্থ পাচারকারীদের সঙ্গে সমঝোতার চিন্তা সরকারের

বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতার চিন্তা করছে বাংলাদেশ সরকার। কম গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমঝোতাকে পুনরুদ্ধারের একটি বিকল্প উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

সম্পদ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে গভর্নর মনসুর জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে অর্থ পাচারে জড়িতদের কাছ থেকে ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় তিনি ১০ কোটি ডলার পর্যন্ত অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যে কাজ করছেন।

গত আগস্টে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানায়, শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা দেশ থেকে বহু বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন।

গভর্নর বলেন, “যদি কারও আইন লঙ্ঘনের মাত্রা তুলনামূলকভাবে হালকা হয়, তাহলে আমরা দেওয়ানি মামলা করব এবং অর্থিক সমঝোতার বিষয়টি বিবেচনায় আনব।”

ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যসহ আগের সরকারের সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী ১১টি পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে বর্তমান প্রশাসন। পাশাপাশি কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে এবং পাচার হওয়া সম্পদ শনাক্তে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস যুক্তরাজ্য সফরে গিয়ে বলেন, “এটি চুরি হওয়া অর্থ। যুক্তরাজ্য সরকারের আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে এই অর্থ শনাক্তে সহায়তা করা।”

গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত সরকারের অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে দাবি করা হয়, শেখ হাসিনার ১৫ বছরে দেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। গভর্নর মনসুর অভিযোগ করেন, সরকারের ঘনিষ্ঠরা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নিয়ন্ত্রণ করে জাল ঋণ ও প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় অর্থ সংগ্রহে লিটিগেশন ফান্ডিংয়ে জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক কোম্পানি অমনি ব্রিজওয়ের কর্মকর্তারা ঢাকা সফর করে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ১৬টির বেশি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

অমনি ব্রিজওয়ের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর উইগার উইলিঙ্গা জানান, “বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে সহায়তা করতে আগ্রহী।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। যতটা সম্ভব অর্থ সংগ্রহে এ উৎসকে কাজে লাগাতে চাই।”

সরকার,সমঝোতা,অর্থ পাচারকারী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত