ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চোর সন্দেহে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা: ৮ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

চোর সন্দেহে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা: ৮ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে দুজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দুই উপপরিচালক (এসআই) ও ছয় কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

একইসঙ্গে ওই হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু জোবায়েরকে তদন্ত কার্যক্রম থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে তারাগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলামকে।

এ বিষয়ে রংপুর পুলিশ সুপার আবু সাইম জানান, ঘটনার সময় তারাগঞ্জ থানা এবং ‍পুলিশ লাইন্সের দুটি টিম সেখানে প্রথমে যায়। কিন্তু উত্তেজিত জনতা অধিক পরিমাণ হওয়ায় তারা সেখানে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে নি। এ বিষয়ে তাদের দায়িত্বে কোন অবহেলা ছিল কিনা সেটি খতিয়ে দেখতে ২ জন এসআই ও ৬ জন কনেস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সি সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার আসিফা আফরোজ আদুরীকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। তাদের তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

শনিবার (৯ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় চোর সন্দেহে রূপলাল দাস ও প্রদীপ দাস নামের দুজনকে আটক করে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকার উচ্ছৃঙ্খল জনতা। নিহতরা সম্পর্কে জামাই-শ্বশুর।

নিহতের পরিবার, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রুপলাল দাসের মেয়ে নুপুর দাসের বিয়ের কথাবার্তা চলছিল মিঠাপুকুর উপজেলার শ্যামপুর এলাকার লাল চাঁদ দাসের ছেলে ডিপজল দাসের সঙ্গে। রোববার (১০ আগস্ট) বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করার কথা ছিল। এজন্য শনিবার বিকেলে মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ে ভাতিজি জামাই প্রদীপ দাস তারাগঞ্জের রুপলাল দাসের বাড়ির দিকে রওনা হন। কিন্তু গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ দাস সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় এসে রুপলালকে ফোন করেন।

সেখানে রুপলাল গিয়ে দুজনে ভ্যানে চড়ে ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে আসছিলেন। রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যানচোর সন্দেহে তাদের দুজনকে থামান স্থানীয় কয়েকজন। এরপর সেখানে লোক জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে প্রদীপ দাসের ভ্যানে থাকা বস্তা থেকে চারটি প্লাস্টিকের ছোট বোতল বের করে লোকজন। এর একটি বোতল খুললে ভেতরে থাকা তরলের ঘ্রাণে অসুস্থ হয়ে পড়েন দুজন। এতে লোকজনের সন্দেহ আরও বাড়ে। এরপর ভ্যানচোর সন্দেহে তাদের মারধর শুরু করেন।

মারধরের একপর্যায়ে অচেতন হলে তাদের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফেলে রাখা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে উদ্ধার করে পুলিশ তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় তাদের। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক রুপলাল দাসকে (৪০) মৃত ঘোষণা করেন। প্রদীপ দাসকে (৩৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রোববার ভোরে তিনিও মারা যান।

আবা/এসআর/২৫

চোর,হত্যা,বরখাস্ত
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত