ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জ্বালানি তেল আমদানিতে ১৪০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে: ফাওজুল কবির

জ্বালানি তেল আমদানিতে ১৪০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে: ফাওজুল কবির

গত একবছরে জ্বালানি তেল আমদানিতে ১৪০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম-ঢাকা জ্বালানি তেল সরবরাহের পাইপলাইন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।

জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, আগে যে প্রক্রিয়ায় জ্বালানি তেল আমদানি করা হতো তা কয়েকজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। নানান সীমাবদ্ধতার কারণে তাতে ৪-৫ জন বিট করতে পারতো। পরে জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে আমরা কয়েকটি স্পেসিফিকেশন তুলে নিয়েছি। এতে করে এখন ১০-১২ জন বিট করতে পারছে।

এর সুফলও পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে। গত একবছরে জ্বালানি তেল কেনার ক্ষেত্রে ১৪০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। বিগত এক বছরে আমাদের বিভিন্ন প্রকল্পে ৪৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

ফাওজুল কবির বলেন, প্রযুক্তির উৎকর্ষতার অনন্য অবদান ঢাকা-চট্টগ্রাম পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন প্রজেক্ট। মানবসম্পদ ছাড়া আমাদের উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ নেই। আমাদের সম্পদও অনেক কম। দুর্নীতি এবং অবচয়ের কারণে তারও সঠিক ব্যবস্থাপনা করা যাচ্ছে না। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতাসাধন করা গেলে আমাদের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে। আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পে অবচয় ও দুর্নীতি কমাতে হবে। তবে এর আগে আমরা চাইছি অপচয় কীভাবে কমানো যায়।

তিনি বলেন, প্রকল্প ব্যয় আমাদের উন্নয়ন কাজের বড় সমস্যা। প্রতিবেশী দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনাতেও আমাদের প্রকল্প ব্যয় বেশি। প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক বিলম্ব হয়। যত বেশি বিলম্ব হয়, তত প্রকল্প ব্যয় বাড়ে। ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্পও তিনবার রিভিশন হয়েছে। অনেক প্রকল্প আছে ১৭-১৮ বছরও হয়েছে, কিন্তু শেষ করা যাচ্ছে না। যেগুলো আমাদের আর টেনে নেয়া সম্ভব না।

যুক্তরাষ্ট্রে সাথে বাণিজ্য ঘাটতি পর্যালোচনার কথা উল্লেখ করে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে বিদেশি অর্থায়নে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় তার বেশিরভাগের স্থানীয় ভ্যালু এডিশন নেই। এটা সামনে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ, উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে স্থানীয় ভ্যালু এডিশন বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রকৌশলীরা তাদের যথাযথ দক্ষতা দেখাতে পারেন না। এটা আমাদের ভাবতে হবে। আর কতকাল চায়না কোম্পানি আমাদের প্রকল্প করে দেবে, ভারতীয় কোম্পানি আমাদের প্রকল্প করে দেবে। পেশার সাথে যায় না এমন অনেক কাজও প্রকৌশলীরা করছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইনের বিষয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, এ পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ায় সড়ক ও নৌ পথে অনেক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে, পরিবেশ দূষণ কমাবে। সময়ও বাঁচবে। আগে যেখানে ট্যাংকার নারায়ণগঞ্জে জ্বালানি পরিবহন করতে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগতো। এখন সেখানে মাত্র ১২ ঘণ্টা লাগবে।

পাইপলাইনের নিরাপত্তায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, পুরো পাইপলাইন অপারেশনে পেট্রোলিয়াম ট্রান্সমিশন কোম্পানিকে দায়িত্ব নিতে হবে।

উল্লেখ্য, ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম পেট্রোলিয়াম জ্বালানি পাইপলাইন প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল পরিবহনে ২০১৬ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালে। তিন দফা মেয়াদ বাড়ানোর পর প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে চলতি বছরের মার্চে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ও ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই পাইপলাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় বছরে সর্বোচ্চ ২৭ লাখ টন বা ৩১৭ কোটি লিটার ডিজেল সরবরাহ করা যাবে।

জ্বালানি তেল,আমদানি,সাশ্রয়,ফাওজুল কবির খান
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত