ঢাকা রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জুলাই হত্যা মামলায় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড

জুলাই হত্যা মামলায় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেন।

ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনও আসামি ছিলেন। মামুন এ মামলায় আসামি থেকে রাজসাক্ষী বনে যান এবং দায় স্বীকার করে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রথম মামলা হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৭ অক্টোবর ২০২৪ থেকে এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয় একই দিনে।

মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে রয়েছে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে ‘উসকানিমূলক বক্তব্য’ দেওয়া, হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূলের নির্দেশ দেওয়া, রংপুরে একজন ছাত্রকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ, রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয়জনকে গুলি করে হত্যা, এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা করার নির্দেশ।

এই মামলায় তদন্ত সংস্থা চলতি বছরের ১২ মে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় এবং ১ জুন ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয় ৮ অক্টোবর, এরপর যুক্তিতর্ক চলে ১২ থেকে ২৩ অক্টোবর। ট্রাইব্যুনাল মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১৭ নভেম্বর তারিখ ধার্য করেন।

শিক্ষার্থী ও জনতাকে হত্যার অভিযোগে মামলায় তিনজনের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক। তারা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। মামলার একমাত্র গ্রেফতারকৃত আসামি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন।

ট্রাইব্যুনালের অভিযোগ অনুযায়ী, শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে মারণাস্ত্র ব্যবহার করে প্রায় দেড় হাজার নিরীহ ছাত্র-জনতা হত্যা এবং ৩০ হাজার মানুষ আহত হয়। পলাতক থাকার কারণে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন না।

আগস্টে শেখ হাসিনার এক বক্তব্যের অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ার পর আদালত অবমাননার মামলায় তাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

মৃত্যুদণ্ড,মামলা,মানবতাবিরোধী অপরাধ,জুলাই গণঅভ্যুত্থান,শেখ হাসিনা,আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত