অনলাইন সংস্করণ
১৫:৫৪, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেন।
প্যানেলের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে—গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূলের নির্দেশ; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ; রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার নির্দেশ প্রদান।
শুরুতে মামলার একমাত্র আসামি ছিলেন শেখ হাসিনা। পরে ১৬ মার্চ সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে মামলায় যুক্ত করা হয়। সর্বশেষ গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নামও অন্তর্ভুক্ত হয়।
গত ১০ জুলাই মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই দিনই সাবেক আইজিপি মামুন ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন এবং পরে তিনি ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। শেখ হাসিনা তখন ভারত পালিয়ে যান, যার মধ্য দিয়ে তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলার তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক এবং দুজনই বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। গ্রেফতার হওয়া একমাত্র আসামি হলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
পলাতক থাকায় শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামাল রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার।
তিনি জানান, ট্রাইব্যুনাল আইনে বলা আছে যে রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হয়। তবে আপিলের সুযোগ নিতে হলে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আত্মসমর্পণ করতে হবে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হতে হবে।